পোড়া ঘরের জিনিস কুড়ানোর সময় কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলছিলেন ময়না। বস্তির পাশেই তার একটি চায়ের দোকান ছিলো।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও রেল কলোনির বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করে সকাল সাড়ে ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানিক (৩৫) নামে একজন কলোনি বস্তির বাসিন্দা দগ্ধ হন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, মানিকের শরীরের ১৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
দগ্ধ মানিক বাংলানিউজকে জানান, তিনি ওই বস্তিতে বসবাস করেন। পেশায় একজন ভ্যানচালক। আগুনের সময় তিনি ঘরের মধ্যে ঘুমাচ্ছিলেন। তার বাবার নাম ওসমান গণি।
অন্যদিকে, ময়না অভিযোগ করে বলেন, কেউ বস্তিতে আগুন লাগাইয়া দিছে। ঘরের ভেতর ফ্রিজ ও টেলিভিশন সব পুইরা ছাই। আমার নতুন বিদেশি কম্বলও পুইরা গেছে।
কয়েকদিনের মধ্যে বস্তি ভাঙার কথা ছিলো, তাই সব গুছাইয়া রাখছিলাম চইলা যামু বলে। কিন্তু আগেই আগুনে সব পুইরা গেলো, যোগ করলেন তিনি। ময়না জানান, গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে ঘর নির্মাণের জন্য বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলেছিলেন। ব্যাংকের কাগজপত্রসহ সবকিছুই আগুনে পুড়ে গেছে।
বস্তির বাসিন্দা ভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে তার জানি না। আগুনের খবর শুনে দ্রুত ছুটে এসেছি, কিন্তু কোনো কিছুই বের করতে পারিনি। সব পুড়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা যে সম্বলটুকু বাঁচাতে পেরেছেন, সেটুকু নিয়ে রেললাইনের উপরেই অবস্থান করছেন।
কেউ পোড়া কাপড় জড়িয়ে কাঁদছেন, আবার কেউ পরিবারের স্বজনদের ধরে কাঁদছেন।
তেজগাঁও রেল কলোনিতে নিম্ন আয়ের মানুষদের বসবাস। বস্তির ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, আগুনে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ঘর পুড়ে গেছে। সঙ্গে কিছু দোকানও।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭
এসজেএ/এএটি/এসএনএস