এরা হলেন, কাভার্ডভ্যানের চালক যশোরের আশা ইসলাম এবং গোপালগঞ্জ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিনজা গ্রামের ডা. মো. গোলাম রসুল। ডা. গোলাম রসুল ঢাকার ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নড়াইলে চেম্বার করতেন।
এছাড়া হানিফ পরিবহনের চালক হেমায়েত ও হেলপার জুয়েল এবং অপর একযাত্রী নুর জালালের নাম জানা গেলেও মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহগুলো ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত ডা. গোলাম রসুলের ছেলে আবু তালেব মো. সালাহউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, দুর্ঘটনার খবর শুনে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসি। মর্গে রাখা মরদেহগুলোর মধ্যে বাবার গলায় টাই এবং মুখের অবয়ব দেখে তাকে শনাক্ত করতে পেরেছি।
তবে বাকী ১১ মরদেহ এখনো শনাক্ত করতে পারেননি তাদের স্বজনরা।
এবিষয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, পুরো শরীর পুড়ে যাওয়ায় ১১টি মরদেহ শনাক্ত করার মতো অবস্থায় নেই। এখন ডিএনএ টেস্ট করা ছাড়া তাদের পরিচয় জানা যাবে না। আর আমাদের মেডিকেলে ডিএনএ টেস্ট করা যায়না। এটা ফরেনসিক বিভাগের কাজ, তাই ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠাতে হবে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কামরুজ্জামান জানান, মরদেহগুলো প্রপার আইডেন্টিফিকেশন ছাড়া হস্তান্তর সম্ভব নয়। নামপরিচয় জানতে পারলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে দুর্ঘটনায় আহতদের মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে খুলনা থেকে নড়াইলের লোহগড়া হয়ে হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকা আসার পথে ফরিদপুরের নগরকান্দায় একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হানিফ পরিবহনের ওই বাসটিতে ৩৯ জন যাত্রী ছিল। আর বিপরীত দিক থেকে আসা পারভেজ ট্রান্সপোর্টের ওই কাভার্ডভ্যানটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক হয়ে খুলনার দিকে যাচ্ছিলো।
দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি ২টি উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম নাসিম বাংলানিউজকে জানায়, খুলনা থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে খুলনাগামী একটি কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে। এতে বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে দুই গাড়িতেই আগুন ধরে যায়। এসময় আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই ১৩ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৫ জন। তাদের ভাঙ্গা ও মুকছেদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কানজক বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে ফরিদপুর ও মুকছেদপুর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভায় এবং হতাহতদের উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭
এসএইচ
**ফরিদপুরে বাস-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১৩