ফুট ওভারব্রিজ বা জেব্রা ক্রসিং না থাকায় বাধ্য হয়েই পথচারীদের এভাবে রাস্তা পার হতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন ওই স্থানে ফুটওভার ব্রিজের পরিকল্পনা আছে, দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে।
রাজধানীতে সড়ক পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ব্যস্ততম রাজপথের অনেক স্থানেই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয় নগরবাসীদের। এসব স্থানের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শ্যামলীর শিশুমেলা মোড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিশুমেলা মোড়ে রাস্তা পার হওয়ার জন্য কোনো ফুটওভার ব্রিজ নেই। রাস্তার মাঝের ডিভাইডারে উচু রেলিং দেয়া। তবে রেলিংয়ের অনেক জায়গাই ভেঙে যাওয়ায় সেই ফাঁক দিয়ে রাস্তা পার হন পথচারীরা।
কোন কোন পথচারী বলছেন, খুব প্রয়োজন না হলে এমন ঝুঁকি কেই বা নিতে চায়।
ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় ব্যাংকার তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখানে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। অধিকাংশ ওষুধের দোকান রাস্তার বিপরীত পাশে, মানুষ কি করবে। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নেয় তারা।
সরেজমিনে দেখা যায় পথচারীদের বেশির ভাগই ঢাকা শিশু হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রাস্তা পার হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন শিশু হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা কামরুল ইসলাম।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আগে একটা ক্রসিং ছিল, ট্রাফিক পুলিশ ছিল, সিগন্যাল পড়লেই রাস্তা পার হবার সুযোগ ছিল। এখন সেই সিগন্যাল তুলে দেওয়া হয়েছে। নেই কোনো ফুটওভারব্রিজ, এমনকি জেব্রা ক্রসিংও। সব সময় লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে এই এলাকা। সারিবদ্ধভাবে দল নিয়ে পার হতে হয়। দ্রুতগতিতে গাড়িগুলো চলাচল করায় রাস্তা পার হবার সুযোগই পাওয়া যায় না।
এই মোড়ে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখা যায়, প্রতি মিনিটে প্রায় ৩০-৪০ জন পথচারী রোড ডিভাইডারে স্থাপিত রেলিংয়ের ভাঙা অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
শুধু মানুষই না, রীতিমতো রিকশা, মোটরসাইকেলও পার হচ্ছে ওই স্থান দিয়ে।
এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অজিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এই রকম গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত সড়কে ফুটওভারব্রিজ থাকা অনেক জরুরি। জায়গা সংক্রান্ত জটিলতায় কাজগুলো অসমাপ্ত রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেন, ফুটওভার ব্রিজ কোথায় হবে আর কোথায় হবে না, সেটা একটা পরিসংখ্যানগত বিষয়, তবে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই রাস্তাগুলোর প্রতি যদি কর্তৃপক্ষ নজর দেয়, তাহলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এসটি/আরআই