ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ মে-জুনের আগে নয়

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ মে-জুনের আগে নয় মৈত্রী এক্সপ্রেস

ঢাকা: সরাসরি যাত্রীবাহী খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ এক্সপ্রেস চলাচল ফের পিছিয়ে গেছে। প্রথমে জানুয়ারি ও পরে ফেব্রুয়ারিতে এ ট্রেন চালুর সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল।

নতুন করে পিছিয়ে যাওয়ায় আশায় বুক বেঁধে থাকা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুলনা-বরিশাল বিভাগবাসী হতাশ।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান  বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলানিউজকে জানান, অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ এখনো শেষ করা যায়নি।

তাই পিছিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সম্ভবত: মে-জুনের আগে খুলনা-কলকাতা মৈত্রী-২ এক্সপ্রেস চালু করা সম্ভব হবে না। সীমান্তের ওপারে হরিদাসপুরে নিরাপত্তাবলয়ের সুরক্ষা দিতে কাস্টমস-ইমিগ্রেশন অফিসটি তাঁরকাটা দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কাজ এখনো শেষ করা হয়নি।

এর আগে হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেছিলেন,  ‘খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ভারতীয় রেল বিভাগ তাদের অংশে রেলওয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সংস্কার কাজ শুরু করেছে’।

‘জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে যেন এ পথে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল চলাচল শুরু করতে পারে, সেজন্য আমাদের অংশেও দ্রুত প্রয়োজনীয় সকল কাজ চলছে’।

এ বিষয় নিয়ে গত বছরের ০৩ নভেম্বর যশোরের বেনাপোলে পরিদর্শনে যান হাবিবুর রহমান। বেনাপোল রেলস্টেশন ভবনে কাস্টমস, রেলের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে  বৈঠকে বেনাপোলে কী কী অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে- সে পরামর্শ চান।

সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এ রুটে যাত্রীবাহী মৈত্রী-২ ট্রেন সপ্তাহে একবার করে কলকাতা যাবে ও সেখান থেকে আবার যাত্রী নিয়ে ফিরবে। পরে গুরুত্ব বিবেচনা করে রেল চলাচলের দিনক্ষণ ও স্টেশন সংখ্যা বাড়ানো হবে। খুলনা থেকে যাত্রীরা ট্রেনে চড়ে সরাসরি বেনাপোলে পৌঁছাবেন। সেখানে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের বুথে পাসপোর্ট ও ব্যাগেজ তল্লাশির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে কলকাতা পৌঁছাবেন।

ব্রিটিশ শাসনামলে খুলনা-কলকাতার মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হয়। ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পরও তা অব্যাহত ছিল। যাত্রী সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখে রেলের মধ্যেই ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সম্পন্ন হতো। বাড়তি কোনো সময় ব্যয় হতো না। যাত্রীরা দ্রুততার সঙ্গে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারতেন।

কিন্তু ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমানে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সাতটি বগি নিয়ে ঢাকা-কলকাতা 'মৈত্রী এক্সপ্রেস' চলাচল করছে। এসি/ নন এসি মিলিয়ে বাংলাদেশ রেকের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪১০ জন। আর ভারতীয় রেকে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪৪৯ জন।

যাত্রীদের দাবির মুখে গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা-কলকাতা রুটে ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে চারটি হয়েছে। চতুর্থ মৈত্রী এক্সপ্রেসটি চলছে প্রতি শুক্রবার কলকাতা থেকে ও শনিবার ঢাকা থেকে।

বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে প্রতি সপ্তাহের বুধ, শুক্র ও রোববার কলকাতার চিৎপুর স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আর শনি, সোম ও মঙ্গলবার সকালে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে ঢাকার গন্তব্যে।  

উভয় দেশে বেশ ঘটা করে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম দিকে যাত্রীর অভাবে প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। ক্রমাগত লোকসান গুণতে থাকায় দু’পক্ষই মৈত্রী নিয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিল।

তবে যাত্রী সংখ্যা আশাতীত বাড়ায় এখন প্রতিটি মৈত্রী এক্সপ্রেস থেকে বাংলাদেশ বছরে দুই কোটি টাকা আয় করে। অর্থাৎ চারটি মৈত্রী এক্সপ্রেস থেকে বাংলাদেশের আয় হচ্ছে আট কোটি টাকা। এ আয়ে উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এসএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।