বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে এ দু’টি মামলার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
আদালত সূত্র জানায়, রাগীব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তির হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় আরও পাঁচজন সাক্ষি সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আলোচিত এই মামলায় মোট ২১ জন সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) হবে।
এ মামলার আসামিরা হলেন- রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, তারাপুর চা বাগানের সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত।
এদিকে, একই আদালতে আরেকটি মামলায় রাগীব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন (চার্জগঠন) করা হয়েছে। দুপুরে মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
স্থানীয় ‘দৈনিক সিলেটের ডাক’র প্রকাশক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি সিলেটের ‘কথিত’ শিল্পপতি রাগীব আলী। তার ছেলে আব্দুল হাই ওই পত্রিকার সাবেক সম্পাদক।
পলাতক থেকে পত্রিকা সম্পাদনা করে প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেছিলেন সুনামগঞ্জের ছাতক প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও নগরীর উপশহরের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন তালুকদার।
এজাহারে বলা হয়, পলাতক কোনো আসামি আইনের সুবিধাভোগী হতে পারে না। সংবাদপত্র একটি আইনি প্রকাশনা। সিলেটের ডাক’র সম্পাদক ও প্রকাশক আদালতে আত্মসমর্পণ না করে নিজ নাম ব্যবহার করে পত্রিকা প্রকাশ করতে পারেন না।
এতে প্রিন্টার্স লাইনে আইন লঙ্ঘন করে নাম ব্যবহার করে পাঠকদের সঙ্গে ফাঁকিবাজি ও প্রতারণা করেছেন। গত বছরের ১১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই তাদের নাম যুক্ত করে দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশক্রমে প্রতারণার অপরাধ করেন। পলাতক অবস্থায় সম্পাদনাজনিত প্রতারণার জন্য আবদুল হাই ২৯টি সংখ্যা প্রকাশ করে ২৯টি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। একইভাবে রাগীব আলী প্রকাশক ও মুদ্রক হিসেবে দ্বৈত সত্ত্বায় প্রতিদিন দু’টি করে অপরাধের দায় বহন করায় অপরাধের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮টি।
পলাতক অবস্থায় প্রতিদিন পত্রিকা সম্পাদনাজনিত প্রতারণার মাধ্যমে একটি করে অপরাধ করেছেন। সে হিসাবে রাগীব আলীর ৫৮ বছর ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ২৯ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেন মামলার বাদী।
এ মামলায় দণ্ডবিধির ৪১৭ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন বিচারক। সমন পাওয়ার পর জবাব না দেওয়ায় পরবর্তী মাসে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ মামলার চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচারকার্য শুরু হয়।
মামলায় বাদী পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মুজিবুল হক ও অ্যাডভোকেট শহীদুল হক শাহীন।
সিলেটের ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে ১৪ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে তারা উভয়ে কারাভোগ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এনইউ/জিপি/এসএইচ