ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর সড়কগুলোতে সাধারণ পরিবহন না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে কর্মস্থল থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হওয়া মানুষকে।
সড়কগুলোতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনা থাকলেও নিয়মিত ভাড়ার থেকে ৩-৪ গুণ বেশি চাচ্ছেন চালকরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর বাড্ডা, মহাখালী, ফার্মগেট ও শুক্রাবাদ এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবহন না থাকায় নিজ গন্তব্যে হেঁটে রওনা দিয়েছেন অনেকেই। কিছু রাস্তায় অল্পসংখ্যক পরিবহন চলাচল করেলেও নিয়মিত ভাড়ার থেকে ৩-৪ গুণ বেশি চাচ্ছেন চালকরা। আর বেশি টাকা আয়ের কথা চিন্তা করে অনেক চালকই গাড়ি চালাচ্ছেন বেপরোয়া গতিতে। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। এছাড়া অনেক যাত্রীকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিকআপ ভ্যান, লেগুনার বাম্পারে দাঁড়িয়ে নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা দিন যেমন তেমন করে পার হলেও অফিস ছুটি হওয়ার পর তাদের সব থেকে বেশি বিপাকে পড়তে হয়েছে। তারা বলছেন আদালত অপরাধীদের তাদের অপরাধের কারণে সাজা দিয়েছে এর জন্য সাধারণ মানুষদের কেন ভোগান্তিতে পড়তে হবে। তাছাড়া এই ধর্মঘটের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু গাড়ি চালক মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছে বলেও তারা জানিয়েছেন।
রাজধানীর মহাখালী মোড়ে পরিবহনের জন্য দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত হেঁটে রওনা দেওয়া বেসরকারি ব্যাংকের চাকরিজীবী বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাসা আদাবরে। অফিস থেকে বের প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত হেঁটেই রওনা দিলাম। এটা কোন যুক্তি হলো ধর্মঘট ডাকার, অপরাধীদের আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করবে এটাই তো স্বাভাবিক। তাই বলে অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগে ফেলবে তারা। আমার সরকারের কাছে দাবি, তারা যেন এ সব অসাধু পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ফরহাদ হোসেন ইভান খামারবাড়ি মোড়ে মিরপুরগামী বাসের জন্য প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। সরকারকে এ ব্যাপার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সারা রাজধানীতে কোন পরিবহন চলাচল করছে না, আর সামান্য সংখ্যক পরিবহন চললেও অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছে। আদালতের রায়ের জন্য কি আমরা দায়ী। সরকারের উচিৎ এ ধর্মঘট ডাকার মূল হোতাদের বিচারের আওতায় আনা।
উল্লেখ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক মুনীর ও চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদসহ ৫ জন নিহতের মামলায় বাস চালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন এবং অপর একটি মামলায় ট্রাক চালক মীর হোসেন মিরুর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮,২০১৭
এমএ/আরআই