ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রিকশা-ভ্যান-অটোরিকশা চালকদের পোয়া বারো

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৭
রিকশা-ভ্যান-অটোরিকশা চালকদের পোয়া বারো ভ্যানগাড়িও হয়ে উঠেছে প্রয়োজনীয় বাহন/ছবি: মুজিবুর-বাংলানিউজ

ঢাকা: পরিবহন ধর্মঘট সামনে রেখে স্বেচ্ছাচারিতায় মেতেছেন রাজধানীর রিকশা-অটোরিকশা চালকেরা। ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকিয়ে জিম্মি করছেন যাত্রীদের। সুযোগ পেয়ে ভিআইপি সড়কেও নির্বাধায় চলছে রিকশা। কর্মমুখী মানুষ বাধ্য হয়ে এসব বিকল্প বাহন ব্যবহার করায় পোয়া বারো চালকদের।

বিভিন্ন সড়কে বুধবার (১ মার্চ) সকাল থেকেই যাত্রীবাহী বাস চলাচলে অবরোধ সৃষ্টি করে শ্রমিকরা। বাদ যায়নি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও।

তবু রিকশার পাশাপাশি অটোরিকশা চলেছে বিভিন্ন রুটে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নিরুপায় হয়ে রিকশা-অটোরিকশার দিকে ঝুঁকতেই বাধ্য হয়েছে সাধারণ মানুষ। আর এ সুযোগে তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করেছে তারা। অনেকে আবার কোনো বাহনের তোয়াক্কা না করে গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছেন হেঁটেই।

আগারগাঁও মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক রাজুর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বেশি তো নিচ্ছি না। আজ আমরা সুযোগ পাইছি। এমন দিন তো প্রতিদিন আসবে না। সাতটায় বাইর হইছি। পকেটে দুই হাজার টাকা আসছে। এ রকম থাকলে আরও আয় হইবো।

রাজধানীর কয়েকটি ভিআইপি ও ব্যস্ত সড়ক ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর, ফার্মগেট রিকশাভ্যান চলাচল করছে। এছাড়া বিজয় সরণি ও আগারগাঁও থেকে এলেনবাড়ি যাওয়ার ভিআইপি সড়কেও অবাধে চলতে দেখা গেছে রিকশা-ভ্যান। সিরিয়াস রোগীকে হাসপাতালে নিতেও ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভ্যান।

ফাঁকা সড়কে চলছে রিকশা/ছবি; জিএম মুজিবুরতবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সামনে সকালের দিকে রিকশা চলতে দিলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে যানজট দেখা দেয়। ফলে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

‘কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ’- মিরপুর ১০ থেকে আগারগাঁও আসতে সাধারণ সময়ে ৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। সেখানে বুধবার পরিবহন ধর্মঘটের সুযোগে ১৫০ টাকা নিচ্ছেন রিকশাচালকরা। আগারগাঁও থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আসতে আরও ১২০ টাকা ভাড়া গুনছেন যাত্রীরা।

মিরপুর ১০ থেকে ফার্মগেট, মোহাম্মাদপুর, গাবতলী, নিউমার্কেট ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা করে ডাকা-ডাকি করছেন রিকশাচালকরা। এক ভ্যানের মধ্যে ছয়জন যাত্রী। শেওড়া পাড়া থেকে ফার্মগেট যাত্রী প্রতি ৫০ টাকা।

এমন ভাড়া নৈরাজ্য দেখে মতিঝিলগামী আব্দুস সাত্তার নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রীতিমতো চরম দুর্ভোগ। এমন পরিস্থিতিতে হরতালেও পড়িনি। কাল থেকে দুই হাজার টাকা সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া দিলাম। সরকারের উচিত এ অচলবস্থা দ্রুত নিরসন করা।  

ভ্যানগাড়িও হয়ে উঠেছে প্রয়োজনীয় বাহন/ছবি: মুজিবুর-বাংলানিউজসংসদ ভবন থেকে বিজয় সরণি সড়কে একটি ভ্যান ঠেলে নিয়ে যেতে দেখা গেলো। ভ্যানে ৭ জন বসা তাতে। আইডিবি এসে ভ্যান বিকল হলে চালক ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

এ অবস্থা দেখে আলীমুর নামে এক পথচারী বলেন, বেশি খাইতে গেছে তাই এ অবস্থা। সুযোগ পাইছে হুশ আর নেই।

এদিকে মিরপুর, ফার্মগেট কারওয়ান বাজার, কাকলী, মহাখালী প্রতি স্থানেই হাজার হাজার মানুষকে পরিবহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।  

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মন্ত্রীর আহ্বানের পর যানবাহন চলাচল সামান্য পরিসরে শুরু হলেও অচালবস্থা কাটেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৭

এমসি/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।