পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চরম বিপাকে পড়ে রাজধানীবাসী। বুধবার কেউ অফিস গিয়েছেন হেঁটে, কেউ আকাশচুম্বী ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়ে, কেউ আবার ভ্যানে চড়ে।
প্রগতি সরণিতে বায়িং হাউজে চাকরি করেন নুসরাত আহমেদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকালে অফিসে আসার সময় হেঁটে ও রিকশায় করে এসেছি। ৫০ টাকার রিকশা ভাড়া দিতে হয়েছে ১২০ টাকা। বাকিটা আবার হেঁটে এসেছি। সারাদিন টেনশনে ছিলাম ফিরবো কীভাবে ভেবে। দুপুরে জানলাম যান চলাচল শুরু হয়েছে। বেরিয়ে লোকাল বাস দেখতে পেয়ে খুশি হয়েছি। জীবনে কোনোদিন লোকাল বাস দেখে এতো খুশি হইনি।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস, সিএনজি অটোরিকশা, হিউম্যান হলার চলছে স্বাভাবিকভাবে। রিকশা ভাড়াও নেমে এসেছে স্বাভাবিক মাত্রায়।
তবে মহাখালীতে খুচরা গেঞ্জি বিক্রেতা রফিক জানালেন সারাদিনের ক্ষতির কথা। তিনি বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। বড় বড় কথা বুঝি না। সকালে আসার কতো চেষ্টা করছি, পারিনি। দুপুরের পরে আসছি। দোকান খুলছি ৪টায়। তাইলে এই যে সারাদিন আমার কামাই হইলো না আমি খামু কি আর বাচ্চারে খাওয়ামু কি। বড়লোকের ক্ষতি হয় না, ক্ষতি হয় আমাগো মতো গরিবগো।
তবে এ ধরনের অযৌক্তিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রীরা। ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির কর্মকর্তা টিটো কর্মকার বলেন, মানুষ মারা গেছেন। তার বিচারের রায় হয়েছে। তা নিয়ে কি করে আন্দোলন করে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা যায়! যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নয়তো ভবিষ্যতে এমন অযৌক্তিক আন্দোলন আরো হতে পারে।
চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার মামলায় বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এই ধর্মঘট পালনে সেদিন থেকেই গাবতলীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। রাতে কয়েক দফায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়।
বুধবার দুপুরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহবান জানালে পরিবহন শ্রমিকেরা রাস্তায় গাড়ি চালানো শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৭
ইউএম/আরআর/এএ