বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে দু’টি আয়োজনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক অভিভাবক, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে যারা স্বচ্ছল ব্যক্তি আছেন তাদের আহ্বান জানাবো, খেলাধুলার প্রতি ছেলেমেয়েরা যেভাবে মনোনিবেশ করছে, তাদের আরও উৎসাহিত করতে হবে এবং সব ধরনের সহযোগিতা স্কুলগুলো যেন পায় সে ব্যবস্থা তারা করবেন।
খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা ছেলেমেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ দেয়। প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলে, সেইসঙ্গে তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার মধ্যাহ্ন বিরতির সময় খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে খেলা শুরুর আগেই স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় স্কুল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের পদচারণায়। টান টান উত্তেজনার খেলা উপভোগ করতে থাকেন তারা। প্রধানমন্ত্রী স্টেডিয়ামে পৌঁছালে গ্যালারির দর্শকরা তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে তাদের অভিনন্দন জানান।
ক্ষুদে খেলোয়াড়দের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, এখানে আসার আগেও ঘরে বসে টেলিভিশনে খেলা দেখছিলাম। গোল দেওয়াটাও আমি দেখে এসেছি। প্রত্যেকে অত্যন্ত চমৎকার খেলেছে। এত চমৎকার খেলা তারা খেলেছে যেটা ধারণাও করা যায় না।
এ ক্ষুদে খেলোয়াড়রা একদিন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভালো পারদর্শিতা দেখাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ খেলাধুলায় আরও এগিয়ে যাক। ছেলে-মেয়ে সকলেই সমানভাবে খেলুক। সেজন্য আমরা বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট ও মেয়েদের জন্য বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি।
এ দু’টি টুর্নামেন্ট সুন্দরভাবে আয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টুর্নামেন্ট দু’টিতে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫২ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। আমার মনে হয় পৃথিবীতে আর কোনো দেশে এত বিশাল আকারে কোনো টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয় না, কোনো খেলাধুলা হয় না।
প্রত্যেক উপজেলায় একটি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি খেলাধুলার সরঞ্জাম সরবরাহসহ বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে রাজশাহীর চারঘাটার বড়বাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় লালমনিরহাট পাটগ্রামের তেপুরগাড়ী বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলে কক্সবাজারের পেকুয়ার টৈটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিলেটের জৈন্তাপুরের কামরাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ খেলায় টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে জয় লাভ করে টৈটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বঙ্গবন্ধু গোলকাপের গোল্ডেন বুট পেয়েছেন কক্সবাজারের টৈটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মিনার উদ্দিন বুলেট। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপের গোল্ডেন বুট পেয়েছেন টাঙ্গাইলের বাগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমা আক্তার।
পরে প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, প্রাথমিক ও গণমিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭/আপডেট ২২০১ ঘণ্টা
এমইউএম/আইএ/এইচএ/
আরও পড়ুন
** প্রাথমিকের শিশুদের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী
** ছেলেদের চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজার, মেয়েদের লালমনিরহাট