ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

লিটন হত্যা

অবৈধ সম্পদের মালিক আব্দুল কাদের খাঁন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৭
অবৈধ সম্পদের মালিক আব্দুল কাদের খাঁন

গাইবান্ধা: গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. আব্দুল কাদের খাঁন এলাকায় বিত্তশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তিসহ প্রায় ২০০ বিঘা জমির মালিক তিনি।

অথচ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। সম্পদের ১৪ ভাগই গোপন রেখে নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হন তিনি।

তার এ অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছেন দুর্নীতি দমণ কমিশন (দুদক)। ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তার অবৈধ সম্পদের উৎস খুঁজতে শুরু করেছে দুদক।

এছাড়া আব্দুল কাদের খাঁনের নামে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ছাপরহাটি নিজ গ্রামে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর বিলাসবহুল দো-তলা বাড়ি রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাড়ির সামনে বিশাল তিনটি পুকুর। বগুড়া শহরে তার নামে কেনা জমি ও একটি বহুতল বাড়িও রয়েছে। এছাড়া বগুড়ায় অবস্থিত গরীব শাহ ক্লিনিক নামে চারতলা একটি ক্লিনিকও রয়েছে তার। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে করলে আব্দুল কাদের খাঁনের সম্পদ ১৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

এমপি থাকাকালীন আব্দুল কাদের খাঁনের ব্যক্তিগত সহকারী বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, ‘আব্দুল কাদের খাঁনের বাবা পেশায় কৃষক ছিলেন। তারপরেও সুন্দরগঞ্জে বিত্তশালী কয়েক ব্যক্তির মধ্যে তার নাম ছিল। বাবার মৃত্যুর পর পৈত্রিক সূত্রে প্রায় ১০০ বিঘা জমি পেয়েছেন তিনি। বাকী জমি সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন কিনেছেন। বর্তমানে আব্দুল কাদের খাঁনের নামে সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে।

আব্দুল কাদের খাঁন সম্পর্কে ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ বলেন, ‘আব্দুল কাদের খাঁন প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক। এমপি থাকাকালীন অনেক দুর্নীতি করেছেন তিনি। সেসময় তার বিরুদ্ধে টিআর, কাবিখাসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। এছাড়া দুর্নীতি দমণ কমিশনে এখনও তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি। ’

জেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকার জানান, ‘দীর্ঘদিন সেনাবাহীনিতে চাকরি করার পর ২০০৪ সালে কর্নেল হিসেবে অবসর গ্রহণের পর নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর এলাকায় পরিচিতি লাভ করার জন্য শুরু করেন ফ্রি চিকিৎসা। এভাবেই সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ২০০৫ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে তিনি পরিচিতি পান। এরপর হঠাৎ করেই জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা নিয়ে তিনি এমপি হন। এরপর থেকে এলাকায় আসা যাওয়া কম করতেন এবং জেলা উপজেলা নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তেমন যোগাযোগ রাখতেন না আব্দুল কাদের। ’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আব্দুল কাদের খাঁন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে প্রধান আসামি করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হবে। এছাড়া আব্দুল কাদের খাঁনের অবৈধ সম্পদের খোঁজে দ‍ুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাঠে কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ০২ মার্চ, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।