ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সপ্তাহ পেরোলেও গ্রেপ্তার হয়নি খোকন হত্যার মূল আসামি

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৭
সপ্তাহ পেরোলেও গ্রেপ্তার হয়নি খোকন হত্যার মূল আসামি সিজান রেস্টুরেন্টের সামনে বাবুল ও খোকনকে ছুরিকাঘাত করে শাহবুদ্দিন। ফাইল ফটো

ঢাকা: রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটের হকার খোকন মোল্লা হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শাহবুদ্দিন ও তার প্রধান সহযোগীদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহ পেরোনোর পরও প্রধান আসামিরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।  

গত ২২ ফেব্রুয়ারি খোকনকে ছুরিকাঘাত করে মারার পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি তার স্ত্রী মিনারা বেগম বাদী হয়ে মোট ১০ জনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এতে শাহবুদ্দিন, হানিফ, সোহেল, রিপন ও বাঙালি সোহেলের নাম উল্লেখ কর‍া হয়, আসামি করা হয় আরও অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে।

এদের মধ্যে সোহেল ও রিপনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে শাহবুদ্দিন। ধরা যায়নি তার দুই সহযোগী হানিফ ও বাঙালি সোহেলকেও।

সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার সোহেল ও রিপন জিজ্ঞাসাবাদে শাহবুদ্দিনের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। তাদের দেওয়া বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য স্থানগুলোতে খোঁজ করা হচ্ছে।  

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শাহবুদ্দিনসহ পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

সেদিনের হামলায় আহত হন খোকনের সহকর্মী বাবুল বেপারী (৩৮) নামে আরও এক হকার। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওসি বলেন, আহত বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এর মধ্যে বাবুল কথা বলতে না পারলেও আসামিদের নাম শুনে মাথা নেড়ে ইশারা করছেন।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ২টার দিকে চাঁদনী চক মার্কেটের তৃতীয় তলায় সিজান রেস্টুরেন্টের সামনে বাবুল ও খোকনকে ছুরিকাঘাত করে শাহবুদ্দিন। এতে মৃত্যু হয় খোকন মোল্লার (৩০)। আর আহত হয়ে ঢামেকে  ভর্তি হন বাবুল বেপারী।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কেটে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবেই খোকন ও বাবুলকে ছুরিকাঘাত করা হয়।  

মার্কেট সমিতি সূত্রে জানা যায়, মার্কেটের দু’টি ফুটে শতাধিক হকার বসেন। এই ফুটের টাকা তোলার জন্য সেখানে চারটি গ্রুপ কাজ করতো। এ গ্রুপগুলোর প্রধান ছিলেন শাহবুদ্দিন, সোহেল, রিপন ও বাবুল।  

সূত্র জানায়, হকারদের টাকা ভাগাভাগি ও দোকান বসানো নিয়ে শাহবুদ্দিন, বাবুল ও রিপনের মধ্যে প্রায় ঝামেলা হতো।  

তবে আহত বাবুলের ভাগিনা জনি বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, শাহবুদ্দিন ও তার সহযোগী হানিফকে নেশা করতে বারণ করেছিলেন তার মামা (বাবুল)। কথা না শোনায় হত্যাকাণ্ডের তিনদিন আগে হানিফকে মারধরও করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবুলকে প্রাণে মারতে আসেন শাহবুদ্দিন। তখন খোকন বাধা দিতে এলে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় তার। বাবুল হন গুরুতর জখম।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাঁদনী চক মার্কেটের বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে খোকনকে হত্যার পর রক্তমাখা ছুরি হাতে শাহবুদ্দিনসহ অন্যদের ওই রেস্টুরেন্ট থেকে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এসজেএ/এইচএ/

আরও পড়ুন
** 'ফুটে'র টাকা ভাগাভাগি নিয়েই ঘটে হত্যাকাণ্ড
** মাদকের দ্বন্দ্বে খুন হয় খোকন
** রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।