ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এই সাংবাদিক ভাই ছবি উঠাইয়া লাভ কী!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৭
এই সাংবাদিক ভাই ছবি উঠাইয়া লাভ কী! কাজলারপাড় ভাঙ্গাপ্রেস-বাঁশপট্টি (শনির আখড়া) সড়কে জমে থাকা ময়লা-নোংরা পানি/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

“এই সাংবাদিক ভাই ছবি উঠাইয়া লাভ কী। কত সাংবাদিক কতবার ছবি উঠাইল, কিছুইতো হইল না। এ রাস্তা দিয়া অনেক বছর পানি পাড়াইয়া চলাচল করতাছি, কই কেউ তো রাস্তাটির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিল না।”

রাজধানীর কাজলারপাড় শেখদী এলাকাবাসীর দুর্ভোগের সীমা নেই । বৃষ্টিহীন সময়ে জলাবদ্ধতায় বাস তাদের।

তারই ছবি তুলতে গিয়ে অমন উক্তি শুনতে হলো।  
 
কাজলারপাড় ভাঙ্গাপ্রেস-বাঁশপট্টি (শনির আখড়া) সড়কে জমে থাকা ময়লা-নোংরা পানির মধ্য দিয়েই হাঁটছিলেন শেখদী এলাকার হাজী মোঃ ইউসুফ আলী। তার মুখেই ওই ক্ষোভের প্রকাশ।  

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নবগঠিত ৬২ ও ৬৩নং ওয়ার্ডের (মাতুয়াইল ও দনিয়া ইউপির) ভাঙ্গা প্রেস-দক্ষিণ বাঁশপট্টি সড়কের উত্তর কুতুবখালী, দক্ষিণ কাজলা, ছনটেক, কাজলারপাড়, মাতুয়াইল পশ্চিমপাড়া, শেখদী ও বাঁশপট্টি এলাকার পুরোটা জুড়ে এই চিত্র।
রাস্তার ময়লাযুক্ত কালো পানি আর ড্রেনের পচা দুর্গন্ধ এখন এলাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী

রাস্তার ময়লাযুক্ত কালো পানি আর ড্রেনের পচা দুর্গন্ধ এখন এলাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী।
 
ইউসুফ আলীর মতো ক্ষোভ এলাকাবাসী সবার। বাসিন্দাদের আরেকজন বললেন, ‘মানুষ মসজিদে নামাজ পড়তে যাইতে পারে না । ময়লা পানি পারাইয়া মসজিদে যাইতে হয়। ’

আমরা বহুবার এই এলাকার এম পি, চেয়ারম্যান সবাই কে জানাইছি কিন্তু কেউ এই রাস্তাটা ঠিক কইরা দেয় নাই, ক্ষোভ ঝরলো তার কণ্ঠে।  
 ময়লা পানি পার হয়ে মসজিদে যেতে হয়
পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী আরেকজন বললেন, ‘দেখছেন না ময়লা পানিতে দাঁড়িয়ে রুটি-পরোটা বানাচ্ছে । তাও কাস্টোমার আসে না। ’

‘আগে হোটেল ব্যবসা করে দুমোঠু ভাত জুটাইতে পারতাম কিন্তু অনেক দিন এরকম অবস্হা থাকায় এখন আর চলতে পারছি না। আর বেশি দিন এমন থাকলে দোকান বন্ধ করে দিতে হবে, বলেন ওই ব্যবসায়ী।
 
কাজলারপাড় ভাঙ্গা প্রেস থেকে শেখদী পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক এই জলাবদ্ধতায় ঢাকা পড়েছে। তার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে সুয়ায়েজ লাইনের নোংরা আবর্জনা। ফলে দুর্গন্ধযুক্ত পানি রাস্তার জমে যাওয়া পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে আছে।

এলাকাবাসী জানালেন পূর্ব কাজলার ড্রেনের সঙ্গেও এখানকার ড্রেন সংযুক্ত। ফলে অতিরিক্ত পানি সরে না যাওয়ায় এই ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।  

ময়লা পানিতে দাড়িয়ে বুটি-পরোটা বানানো চলছে

এতে রাস্তার দু’পাশের দোকান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।  
 
এলাকার মধ্যেই এক বাসা থেকে অন্য বাসায় যেতে বাধ্য হয়ে যানবাহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। অন্যথায় ডোবা রাস্তার ময়লা পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। এসব এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।  

এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, শেখদী মোল্লা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাওয়া আসায় প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  

ফলে অনেকে এখন এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।  
 
বাংলাদেশ সময় ০৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৭
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।