ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অবিন্তা’র স্বপ্নপূরণ করবে তার পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৭
অবিন্তা’র স্বপ্নপূরণ করবে তার পরিবার অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘আমি মানুষের জন্য চিন্তা করি এবং আমার লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করবো। যা আমি ব্লুপ্রিন্টে উল্লেখ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আজকের এই আমি, আমার সংস্কৃতি ও জাতীয়তার একটি অংশ। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে, আর এ দেশের জন্য কিছু করা আমার নৈতিক দায়িত্ব, যদিও এনজিও প্রতিষ্ঠা করা অতি সামান্য পদক্ষেপ।’

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত অবিন্তা কবিরের এমনই স্বপ্ন ছিল। মৃত্যুর পর খুঁজে পাওয়া অবিন্তার ডায়েরিতে তার এ স্বপ্নের কথাগুলো লেখা ছিল।

আর অবিন্তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তার পরিবার ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

শনিবার (০৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর লা-মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ফাউন্ডেশনের শুভ উদ্বোধন করেন নিহত অবিন্তার মা রুবা আহমেদ।

পাশাপাশি ‘এন ইনটিমেট পোর্ট্রেট অব অবিন্তা কবির’-শীর্ষক বই মোড়ক উন্মোচন ও ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট www.abintafoundation.org উদ্বোধন করেন। এ বইতে অবিন্তার জীবনের ১৯ বছরের স্মৃতিচারণ উল্লেখ রয়েছে।

অবিন্তার মা রুবা আহমেদ বলেন, প্রতিটি সন্তান তার বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে চায়। কিন্তু, আমি এমন এক পরিস্থিতিতে আছি, যে আমার সন্তানের স্বপ্নপূরণ আমাকে করতে হচ্ছে। ’

আজ অবিন্তা আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু ওর স্বপ্নগুলো আমাদের মাঝে আছে। অবিন্তার স্বপ্নগুলোই আমাদের মাঝে ওকে বাঁচিয়ে রাখবে।

তিনি বলেন, সব সময় দেশের মানুষের কথা ভাবতো অবিন্তা। ঢাকা ছিলো অবিন্তার খুব পছন্দের শহর।

ফাউন্ডেশন সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সমাজে স্থান করে দিতে চেয়েছিলো অবিন্তা। পাশাপাশি বয়স্কদের পুনর্বাসন করতে। এতে করে শিশু ও বয়স্করা একে অপরকে দেখাশোনা করবে। তাই, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাদান ও সমাজে ওদের গুরুত্ব তুলে ধরাতে কাজ করবে এ ফাউন্ডেশনটি। এছাড়াও অবিন্তার লক্ষ্যছিলো একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করা।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, অবিন্তা ছিলেন একজন প্রতিভাবান তরুণী, যে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটির শিক্ষার্থী ছিলেন। লক্ষ্য অর্জনে অবিন্তা ছিলো পারদর্শী। ’ বাংলাদেশকে উন্নত স্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে সে ছিলো দৃঢ়-প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সকলে মিলে পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তুলি, ঠিক যেমনটি অবিন্তার স্বপ্নছিলো।

অুনষ্ঠানে আগত অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয় অবিন্তা কবিরের স্মরণে একটি ভিডিও তথ্যচিত্র। এছাড়া তার হাতের লেখা কিছু নোট, চিঠি, তার ব্যবহৃত  খেলনা, বই, খাতা, ব্যাগ ও নিজের ছবিসহ প্রায় ৭০টি সনদপত্র প্রদর্শনী করা হয়।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অবিন্তা কবিরের নানা সনজুর মোর্শেদ, নানী নিলু মোর্শেদ, খালা লুবনা আহমেদ, খালাতো ভাই জেসন ক্রিস্টিফারসহ অন্যান্য স্বজনরা। পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অবিন্তার বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষকসহ পরিচিত অনেকেই।

এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা মার্চ ০৪, ২০১৭
এসজেএ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।