ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসিতে নয়, তদ্বির করলেও ব্যবস্থা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসিতে নয়, তদ্বির করলেও ব্যবস্থা

ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত সেবা আর নিবন্ধন অনুবিভাগে থাকছে না।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে এ সেবা বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে কেউ কোনো সেবা পেতে তদবির বা সুপারিশ করলেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।


 
জানা যায়, এনআইডি সেবা অর্থাৎ নতুন ভোটার হিসেবে সংযুক্ত করা, এনআইডি সংশোধন বা স্থানান্তরের জন্য আর কোনো আবেদন এনআইডি অনুবিভাগে নেওয়া হবে না। ইসির যে বিভাগটি বর্তমানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে কার্যক্রম চালাচ্ছে, এই বিভাগে কেবল জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ এবং প্রবাসী সেবা দেওয়া হবে।
 
সম্প্রতি এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগ এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশও দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপ-সচিব পর্যায়ের ইসির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এনআইডি অনুবিভাগে কাজের চাপ এতো বেড়ে গেছে যে, এখানে আগের আবেদনগুলোই নিষ্পন্ন করতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে ভোটার সংযুক্তি, সংশোধন ও স্থানান্তর বিষয়ক সেবাগুলোকে উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয়ে পুরোদমে বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্তটি আরও আগে থেকেই বাস্তবায়ন হচ্ছে, তবে এরপরও অনেক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কেন্দ্রীয় অফিসে অনেক আবেদন আসছিল। তাই আরও কঠোর অবস্থান নিলো কর্তৃপক্ষ।
 
ইসির ওই অফিস আদেশের একটি অনুলিপি বাংলানিউজের হাতেও এসে পৌঁছেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রবাসী সেবা এবং জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা ছাড়া সব অন্তর্ভূক্তি, সংশোধন, স্থানান্তরের আবেদন সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে অবশ্যই জমা দিতে হবে।
 
কোনো অবস্থাতেই প্রবাসী সেবা, জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা ছাড়া আবেদন এনআইডি অনুবিভাগে গ্রহণ করা হবে না। এমন আবেদন গ্রহণ করা হলে, গ্রহণকারী এবং তদবিরকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
কোনো উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা সেবা প্রার্থীকে এনআইডি অনুবিভাগে সেবা পাওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন, এমন তথ্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে কমিশন। শুধু তাই নয়, ওই অফিস আদেশে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং তাদের আওতাধীন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এনআইডি অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব ধরনের আবেদন যথাসময়ে নিষ্পত্তির জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
 
ইসির উপ-সচিব ও এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনাটি ইতোমধ্যে সব কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, স্মার্টাকার্ড বিতরণ শুরু হওয়ার পর এনআইডি সেবা সংক্রান্ত আবেদন পড়ার হার কেন্দ্রীয় অফিসে অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া প্রতিদিনই সেবা গ্রহীতা নির্বাচন কমিশনেরই কোনো না কোনো কর্মকর্তার সুপারিশ আনছেন। এই সুপারিশ করাকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী আর্থিক লেনদেনেও জড়িয়ে পড়ছেন। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
অনেক কর্মকর্তা আছেন, যারা কীভাবে আবেদনটা সাজালে সহজেই কাজ হয়ে যাবে এসব জানেন। ওইসব কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে সব ঠিকঠাক করে দেন। অনেক সময় জাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেও এনআইডি সংশোধনের আবেদন আসে। কিন্তু তাদের ধরা যায় না; কারণ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদবির থাকে। যা এনআইডি অনুবিভাগের কাজকে খুব বাধাগ্রস্ত করে।
 
এ বিষয়ে উপ-সচিব মো. আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, এটি আসলে এনআইডি অনুবিভাগের কাজের গতি আনতেই করা হয়েছে। এছাড়া অর্থ লেনদেন বন্ধ বা দালালদের দৌরাত্ম রোধে নির্দেশটি ভালো কাজে দেবে বলে আশা করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৭
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।