ফলে এর মধ্য দিয়ে লাল-সবুজ ট্রেনে ভ্রমণের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে এ রুটের যাত্রীদের।
ওইদিন রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রাজশাহী-খুলনা রুটে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন লাল-সবুজ ‘কপোতাক্ষ’ উদ্বোধন করবেন।
রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের পাঁচটি প্লাটফর্মে থাকা যাত্রীদের বসার স্থানগুলো ধুয়ে-মুছে চকচকে করা হচ্ছে। স্টেশনের প্রতিটি দেয়ালে লাগছে খয়েরি ও সাদা রঙের আঁচর। সামনের ফুটপাত ও স্টেশনের সীমানা ঘেঁষে গড়ে তোলা বাগিচাকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে হলুদ রঙের ফুটন্ত গাঁদা ফুলের গাছ দিয়েই। টিকিট কাউন্টারের আশপাশেও ডেকোরেশনের কাজ চলছে জোরেশোরে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিনটেনডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এরইমধ্যে রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচলের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত ১২টি বগি আনা হয়েছে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে রাখা বগিগুলোতে চলছে সিট নাম্বারিংয়ের কাজ। আগামী ১৯ মার্চ দুপুরে রেলমন্ত্রী মজিবুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে এ রুটে নতুন লাল-সবুজ ট্রেনের উদ্বোধন করবেন।
জিয়াউর রহমান জানান, বর্তমানে রাজশাহী-খুলনা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস মোট ৯টি বগি নিয়ে চলাচল করছে। আগামী ১৯ মার্চ থেকে একই নামে চলবে। তবে লাল-সবুজের মাধ্যমে বগি থাকবে ১২টি। আগে কপোতাক্ষে আসন সংখ্যা ছিল ৬শ’ ১৭টি। এখন আসন বেড়ে ৮শ’ ৬৬টিতে উন্নীত হয়েছে। ভাড়া আগের মতোই শোভন ২৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণী ৩৮০ টাকা।
এছাড়া নতুন বগিগুলোতে আগের তুলনায় এসি চেয়ার ও কেবিনের সংখ্যাও বেশি রয়েছে। ফলে রাজশাহী-ঢাকার পর এবার রাজশাহী-খুলনা রুটের রেল যাত্রীরাও নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের স্বাদ পাবেন। যাত্রাপথে অত্যাধুনিক সব সুবিধায় পশ্চিমের এ রেলপথেই মিলবে বিমানের ছোঁয়া। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আলতাফ হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল খুলনার পথে রাজশাহী থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যাত্রী চলাচল করেন। তাই বর্তমানে আসনের প্রায় তিনগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস কপোতাক্ষ। প্রতিদিন দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে রাজশাহী ছাড়ে কপোতাক্ষ। খুলনা পৌঁছায় রাত ৮টায়। আর খুলনা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ভোর সাড়ে ৬টায়। এসে পৌঁছায় ১২টা ২০ মিনিটে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খায়রুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, নতুন প্রতিটি কোচেই আরামদায়ক সিট থাকবে। এ কোচগুলোতে, বিশুদ্ধ পানির জন্য ফিল্টার, টয়লেটে, ঠাণ্ডা-গরম পানির জন্য ব্যবস্থা, খাবার গরম করার জন্য হটকেস, ডিপ ফ্রিজার, বোটল কুলারসহ বিভিন্ন ধরণের উন্নত যাত্রীসেবার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি বগিতেই আছে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা।
সব মিলিয়ে রাজশাহী থেকে ঢাকার পর এবার খুলনা রুটের রেলযাত্রীরা এসব আধুনিক সুবিধা ভোগ করতে যাচ্ছেন ওই ট্রেনে। আগামী ১৯ মার্চ ট্রেনটি চলাচলের জন্য সম্ভাব্য উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই দিন নতুন ট্রেনটির চলাচল উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী। সেই লক্ষ্যে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান পশ্চিম রেলের এ প্রধান কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
এসএস/জেডএস