ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হোলি উৎসবে রঙের খেলায় তরুণ-তরুণীরা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
হোলি উৎসবে রঙের খেলায় তরুণ-তরুণীরা হোলি উৎসবে রঙের খেলায় তরুণীরা। ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ

বগুড়া: হোলি মানেই রঙের খেলা। মানুষের মনে যতো রঙ আছে তা এ খেলার মাধ্যমে ফুটে ওঠে। একে অপরকে রঙ মাখিয়ে সবাই মেতে ওঠেন এ উৎসবে।

ছোটদের কাছে উৎসবটি বেশি রঙিন। তবে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ নিজেকে আবিরের রঙে রাঙিয়ে নেন।


 
বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করে আশীর্বাদ নেন ছোটরা। উৎসব ঘিরে মন্দিরে মন্দিরে রাধা গোবিন্দের পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়। উলুধ্বনি, কাঁসার ঘণ্টা আর পুরোহিতের ঘণ্টায় মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ। দিনব্যাপী চলে এসব অনুষ্ঠান।
 
রোববার (১২ মার্চ) বগুড়া শহরের চেলোপাড়া নব-বৃন্দাবন হরিবাসর প্রাঙ্গণে পরস্পর আবিরের রঙে রাঙিয়ে মেতে উঠেছেন হোলি উৎসবে।
 
সকাল থেকেই তরুণ-তরুণীরা রঙ হাতে নেমে পড়েন। রঙিন রঙে মাখিয়ে নেন নিজেদের। একে অপরের গায়ে মুখে রঙ মাখিয়ে নিজের চেহারাটা বদলে ফেলেন। এভাবে রঙ উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাল্টাপাল্টি করে রঙ দিয়ে আসেন একে অপরে। হোলি উৎসবে রঙের খেলায় তরুণ-তরুণীরা।  ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ
 
বালতি বা অন্য কোনো বাসনে রঙ ভরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন তরুণরা। অনেকেই বাসাবাড়ির ছাদে অবস্থান নেন। সিরিঞ্জে রঙ ভরে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে উদ্দেশ্যে করে সেই রঙ ছোড়া হয়।
 
চিত্রা, সেজুতি, সোনালী, মৌসুমী, আবির, তন্ময়, আনন্দ, তনু, সৌরভসহ একাধিক তরুণ-তরুণী বাংলানিউজকে বলেন, বংশ পরম্পরায় তারা এ উৎসব পালন করে আসছেন। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সকাল থেকেই রঙের খেলায় মেতে উঠেছেন তারা। নিজেরা নানা রঙে রঙিন হচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যকেও রঙে মাখিয়ে এ উৎসবে শামিল করছেন।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, চারটি যুগের মধ্যে বর্তমানে চলছে কলিযুগ। শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা বা দোল উৎসব দ্বাপরযুগ থেকে হয়ে আসছে। আর ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। এই তিথিতেই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু জন্মগ্রহণ করেন বলে গৌরপূর্ণিমা নামেও একে অভিহিত করেন বৈষ্ণব বিশ্বাসীরা। হোলি উৎসবে রঙের খেলায় তরুণ-তরুণীরা।  ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ

এদিনে বৃন্দাবনের নন্দন কাননে শ্রীকৃষ্ণ আবির এবং গুলাল নিয়ে তার সখী রাধা ও তেত্রিশ হাজার গোপীর সঙ্গে মেতে ছিলেন রঙের খেলায়। দিনটি স্মরণে ভগবানকৃষ্ণ ও রাধার বিগ্রহ আবির এবং গুলালে স্নান করে কীর্তনসহ দোলায় চড়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। সঙ্গে কৃষ্ণভক্তরা মেতে ওঠেন রঙের উৎসবে।
 
প্রচলতি কাহিনী অনুযায়ী, বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ একদিন রাধা তার সখীদের সঙ্গে খেলা করছিলেন। হঠাৎ রাধা এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে লজ্জায় পড়ে যান। রাধার লজ্জা ঢাকতে শ্রীকৃষ্ণ সখীদের নিয়ে আবির খেলা শুরু করেন। এসময় সবাইকে আবিরে রাঙিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা আবির খেলার স্মরণে হোলি উৎসব পালন করে থাকেন বলে প্রচলিত।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
আরআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।