ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মিথ্যা মামলা করায় পাল্টা ব্যবস্থায় দুদক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
মিথ্যা মামলা করায় পাল্টা ব্যবস্থায় দুদক

ঢাকা: উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করার অভিযোগে মামলাকারীর বিরুদ্ধে এবারই প্রথম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। দুদক আইন-২০০৪-এর (সংশোধনী-২০১৩) ২৮ (গ) ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে দুদকের নির্ভরশীল একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানায়, মো. আহসান হাবিব নামে এক ব্যক্তি, যিনি গত ২০০৬ সালের ২২ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় ক্রেডিট সুপারভাইজার হিসেবে পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়ার আওতাধীন গোটাপাড়া আর্সেনিক ও সিএডি উপ-প্রকল্পে বাগেরহাটে কর্মরত ছিলেন।

ওই পদে কর্মরত থাকাকালীন তিনি প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগী সদস্যদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি ও সঞ্চয় বাবদ ৪ লাখ ১১ হাজার ৬৯৪ টাকা আদায় করে সংস্থায় জমা না দিয়ে নিজে আত্মসা‍ৎ করেন। পরে পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মো. আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন মামলা (নং ৬পি/২০১৩) দায়ের করে।

মামলা দায়ের করায় আত্মসাতের অভিযোগে মো. আহসান হাবিবকে ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অন্যদিকে পিটিশন মামলা দায়ের করায় মামলাটি অনুসন্ধান করে দুদক।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে দুদক, সজেকা বগুড়ার উপ-সহকারী পরিচালক মো. মাহফুজ ইকবাল সংস্থার অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পান। ফলে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর বাগেরহাট সদর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হয় (মামলা নং ০৮)।

আহসান হাবিব অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অভিযোগটি দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তিনি উল্টো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়ার সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের পরিচালক মো. মাহমুদ হোসেন খান, ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এম এ মতিন ও পরিচালক মো.  নজরুল ইসলামের নামে একটি মিথ্যা পিটিশন (১৩৫পি/২০১৪) মামলা দায়ের করেন।

সেই মিথ্যা মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া কর্তৃপক্ষকে তিনি ‘রিসোর্স ইনভেস্টিগেটর’ পদে চাকরির জন্য সাড়ে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দেন। তবুও ওই পদে তার চাকরি হয় না।

যেহেতু পিটিশন মামলা তাই এবারও মামলাটি অনুসন্ধান করে দুদক।

সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৮ সালে পল্লি উন্নয়ন একাডেমি বগুড়া থেকে ‘রিসোর্স ইনভেস্টিগেটর’ পদে নিয়োগের জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি। এমনকি মো. আহসান এরকম কোনো পদের জন্য আবেদনও করেননি। ঘুষও দেননি। তাই অভিযোগটি নথিভুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তির সিন্ধান্ত নেয় কমিশন।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, অভিযোগকারী মো. আহসান হাবিব মিথ্যা তথ্য দিয়ে কমিশনকে ধোঁকা দিয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর (সংশোধনী-২০১৩) ২৮ (গ) ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর ২৮ (গ) ধারার এটিই প্রথম ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কমিশন। শুধু তাই নয়, ওই অপরাধের জন্য আহসান হাবিব নূন্যতম দুই বছর থেকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
এসজে/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।