ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রিন্স মুসার নামে তিনটি মামলা করবে শুল্ক গোয়েন্দা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
প্রিন্স মুসার নামে তিনটি মামলা করবে শুল্ক গোয়েন্দা প্রিন্স মুসার নামে তিনটি মামলা করবে শুল্ক গোয়েন্দা

ঢাকা: কথিত ধনকুবের প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের ব্যবহৃত বিলাসবহুল গাড়ি রেঞ্জ রোভার জব্দ করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা। গাড়িটি জব্দের সঙ্গে সঙ্গে তিনটি মামলাও করা হচ্ছে মুসার নামে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় মুসা বিন শমসেরের ব্যবহৃত শুল্ক ফাঁকি দেওয়া কালো রংয়ের রেঞ্জ রোভার গাড়িটি জব্দ করা হয় বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মঈনুল খান।

এ বিষয়ে ড.মঈনুল খান বাংলানিউজকে বলেন, তিনটি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

প্রথমত শুল্ক ফাঁকির দায়ে শুল্ক আইনে, দ্বিতীয়ত বিআরটিএ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে সেখানে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলা হবে এবং তৃতীয়ত মানি লন্ডারিং আইনেও তার নামে মামলা করা হবে। কেননা এখানে বিভিন্নভাবে অর্থ রূপান্তর হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে  মুসা ও ফারুজ্জামানের বক্তব্য গ্রহণে শুল্ক গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এরপর তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হবে। কেননা মামলা করার মতো সকল তথ্য প্রমাণাদি শুল্ক গোয়েন্দার হাতে রয়েছে। তাই কোনোভাবেই মামলার হাত থেকে রেহাই পাবেন না শমসের বিন মুসা।

এর আগে আওয়ামী লীগের নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বেয়াই শমসের বিন মুসার শুলশান ২ এর বাসা ৫এ/বি, হাউস ৮, রোড ১০৪ এ বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে বলে শুল্ক গোয়েন্দা জানতে পারেন। মঙ্গলবার সকালে শুরু হয় অভিযান। কিন্তু গাড়িটি মুসার বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। সকালে গাড়িটিতে করে মুসার নাতিকে ধানমন্ডির একটি স্কুলে পাঠানো হয়। সেই তথ্যও শুল্ক গোয়েন্দা জানতে পারে। এরপর অন্য একটি গাড়িতে করে দুপুর ২টার দিকে নাতিকে বাসায় আনা হয়। অবশেষে বিকেল ৩টার দিকে ধানমন্ডির হাউস ৫১-এ, রোড ৬এ-র লেকব্রিজ অ্যাপার্টমেন্টে থেকে গাড়িটি উদ্বার করে শুল্ক গোয়েন্দার ১৫ অভিযানিক দল।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা যায়, গাড়িটি ভুয়া আমদানি দলিল দিয়ে ভোলা ঘ ১১-০০-৩৫ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়েছিল। কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বিল অব এন্ট্রি ১০৪৫৯১১ তারিখ ১৩/১২/২০১১ এ ১৩০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে ভোলা থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এছাড়াও রেজিস্ট্রেশনে গাড়িটির রং সাদা উল্লেখ থাকলেও উদ্ধারকৃত গাড়িটি কালো রংয়ের। আর কাস্টমস হাউসের নথি যাচাই করে এ বিল অব এন্ট্রি ভুয়া হিসেবে প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা ভোলার বিআরটিএ থেকে জানতে পারে গাড়িটি পাবনার ফারুকুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী গাড়িটি মুসা বিন শমসের ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছেন।

২০১৫ সালের ৭ জুন দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণী মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় দুদক আইন ২৬ (১) ও (২) ধারায় ২০১৬ সালের ১০ মার্চ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৬ সালের ২১ মার্চ দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে ছয় পৃষ্ঠার চিঠি পাঠান মুসা। ছয় পৃষ্ঠার সেই চিঠিতে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে মুসার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি দুদকের চলমান রয়েছে।

** প্রিন্স মুসার বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
এসজে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।