বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির সাত দিনের রিমান্ড শেষে পুনরায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এই আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আরো তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যে এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
এদিন বড় মিজানের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিল না। আদালতকে কিছু বলার আছে কি না জানতে চান বিচারক। এসময় বড় মিজান আদালতকে জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
এরপর আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বড় মিজানকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে বনানীর কাকলী রেলক্রসিংয়ের কাছাকাছি একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বড় মিজান নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী চক্রের প্রধান বলে পুলিশ দাবি করেছে।
তাকে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এরপর তাকে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ১৪ মার্চ সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, বড় মিজান নব্য জেএমবির চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী শিবগঞ্জ এলাকার প্রধান দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এর আগে তিনি জুন্দ আল তাওহিদ নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের প্রধান সামরিক কমান্ডার ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি গুলশান হামলার অন্যতম হোতা হিসেবে পরিচিত তামিম চৌধুরীর মাধ্যমে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন।
পুলিশের দাবি, বড় মিজানের নেতৃত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তকেন্দ্রিক অস্ত্র ও গ্রেনেড তৈরির উপকরণ, বিস্ফোরক ও জেল চোরাচালানের একটি চক্র বা সিন্ডিকেট তৈরি হয়, যারা নব্য জেএমবির প্রায় সব অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করে আসছিল।
গত বছর ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এ সময় অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ৫ হামলাকারী নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জিম্মিকে।
ওই ঘটনায় নিহত জঙ্গিরা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও সফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল।
রেস্টুরেন্টে হামলার পর গত ৪ জুলাই রাতে গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
জেডএম/