বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকায় বিটিআরসি ভবনে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ ও ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা নিজ নিজ পক্ষে এ চুক্তিতে সই করেন।
এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ বীনামূল্যে স্যাটেলাইট ভিত্তিক বিভিন্ন সেবার জন্য প্রস্তাবিত দক্ষিন এশিয়া স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়া, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশ এই স্যাটেলাইটে যুক্ত হবে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ সুদৃঢ় হবে।
চুক্তিসই অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, প্রস্তাবিত দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটটি ku ব্যান্ডে ১২টি ট্রান্সপন্ডার বিশিষ্ট জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট। যার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে ভারত সরকার। চুক্তিটি আইটিইউ'র রেডিও রেগুলেশনস এর এ্যাপেন্ডিক্স ৩০বি আর্টিকেল ৬.৬ বিধান মোতাবেক করা হয়।
চুক্তিসই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য বর্ধিষ্ণু অঞ্চলের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অন্যতম। এতোকিছুর পরেও এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ও বাণিজ্য কম। তবে বর্তমানে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্যাটেলাইটে যুক্ত হওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে একটি বিশেষ বার্তা পৌঁছে যাবে, আমরা আর পিছিয়ে নেই।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে অর্থনৈতিক, যোগাযোগসহ বিভিন্ন চুক্তি চলমান আছে। স্যাটেলাইটে যুক্ত হতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২ বছর ধরে আলোচনা চলছিল। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার ফলে মাত্র দুই বছরের মাথায় ব্যাতিক্রমি এই চুক্তিটি করা সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের জন্য আরো একটি মাইলফলক।
এ চুক্তির মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ২০১৪ সালে সার্ক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয় বন্ধুরাষ্ট্রের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই স্যাটেলাইটের কথা বলেছিলেন। এটি একটি যোগাযোগভিত্তিক স্যাটেলাইট, পুরো দক্ষিণ এশিয়া এলাকা যার আওতায় আসবে।
চারশ’ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে টেলি এডুকেশন, ব্রডকাস্টিং, দুর্যোগের আভাসসহ বিভিন্ন যোগাযোগ পেতে সহায়তা করবে।
এটি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক যোগাযোগে ব্যপক প্রভাব ফেলবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
কবে নাগাদ এটি উৎক্ষেপন করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনক্ষণ ঠিক হয়নি, তবে শীঘ্রই এটি সফলভাবে উৎক্ষেপন সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে অডিও বার্তায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপনের ৭৫ ভাগের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২টি গ্রাউন্ড স্টেশনের প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর সফলভাবে এটি উৎক্ষেপন সম্ভব হবে।
আজ এ চুক্তির মাধ্যমে আমরা দক্ষিণ এশিয় স্যাটেলাইটে যুক্ত হতে যাচ্ছি যা আমাদের জন্য আরো একটি আনন্দের খবর।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, দক্ষিণ এশিয় স্যাটেলাইটটি হবে ৪৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংসে। বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাথে এটির পার্থক্য থাকবে ৭০ ডিগ্রি। ফলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে এর কোন প্রভাব পড়বে না।
দক্ষিণ এশিয় স্যাটেলাইটের ১২টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে একটি আমাদেরকে ফ্রি দিচ্ছে ভারত সরকার। এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা স্যাটেলাইটে আরো একটি মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ ভারতীয় হাইকমিশন ও বিটিআরসির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
পিএম/জেডএম