বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবনে ‘সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মসূচি’র জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, আগের তুলনায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান অনেক কমেছে।
শিক্ষকদের মধ্যে আদর্শহীনতার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান কমছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যখন স্কুলে পড়াশুনা করতাম তখন আমাদের শিক্ষকরা নিজেদের উদ্যোগে আমাদের অনেক কিছু শেখাতেন। কিন্তু এখনকার শিক্ষকরা শুধু অপেক্ষায় থাকে কখন স্কুল থেকে গিয়ে প্রাইভেট পড়াবেন। শিক্ষকদের এ ধরনের মানসিকতার কারণে একদিকে যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট হচ্ছে অন্য দিকে শিক্ষাব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জিপিএ-৫ এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জিপিএ-৫ এর নাম দিয়েছি ‘জিপি-৫ নির্যাতন’। এমন একটা অবস্থা সমাজে এখন দাঁড়িয়ে গেছে যেকোনোভাবেই জিপিএ-৫ পেতে হবে না হলে জীবন শেষ হয়ে যাবে।
যারা এমন চিন্তা চেতনা রাখেন তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, যারা জিপিএ-৫ পায়নি তাদের কি এখন আমরা ট্রাকে করে সাগরে ফেলে দিয়ে আসব? কেউ কি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে জিজ্ঞাস করেছে উনারা জিপিএ-৫ পেয়েছে কি না?
সঠিক শিক্ষার অভাবে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে অনেক তরুণরা উগ্রপন্থায় জড়িয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, গুলশানের হোটেলে যে পাঁচটি ছেলে হামলা চালিয়েছিলো তার সবাই শিক্ষিত। কিন্তু তার পরেও কেনো তারা এ দানবীয় কাজ করেছে? কীভাবে ২০ জন মানুষকে হত্যা করে তারা। শুধু তাই নয় নিহতদের রক্তের সামনে বসে বাবুর্চিকে বলেছিলো তাদের জন্য টমেটো দিয়ে চিংড়ি মাছ রান্না করতে, তারা রাতে খাবে। শিক্ষিত হয়েও কীভাবে এই দানবীয় আচরণ তারা করতে পেরেছে?
এর কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, আসল কারণ হচ্ছে ছেলেমেয়েদের আমরা পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য তৈরি করি। তাদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি চর্চা করার ক্ষেত্র তৈরি করছি না। ফলে তারা শিক্ষিত হয়েও এ ধরনের দানবীয় কাজ করেছে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- পিকেএসএফের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, পিকেএসএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
এমএ/জিপি/আরআই