ভয়াবহ সেই ক্ষণে আক্রমণের সংবাদ পুলিশ লাইনস থেকে মুহূর্তে সারাদেশ জানিয়েছেন, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের বাট্টা গ্রামের শাহ্জাহান মিয়া।
পুলিশ কনস্টেবল শাহ্জাহান তখন সেখানকার ওয়্যারলেস অপারেটর ছিলেন।
সেদিনের ওই বার্তার মাধ্যমে দেশের সব পুলিশ স্টেশনসহ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল নিরীহ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের আক্রমণের খবর।
মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান একান্ত আলাপচারিতায় বাংলানিউজে জানান, সেদিন পুলিশের পর্যাপ্ত অস্ত্র না থাকলেও পাকিস্তানিদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য মনোবল ছিলো মূলশক্তি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র ৭ মার্চের দেয়া ভাষণ পুলিশ সদস্যদের শত্রুপক্ষের মোকাবেলা করার সাহস সঞ্চার করেছিল।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি যদি হুকুম দিতে নাও পারি, তোমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করো। ওই ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতেই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে রাজারবাগের পুলিশ সদস্যরা। অস্ত্রের জবাব অস্ত্র দিয়েই দিয়েছে তারা। তবে পাকিস্তানিদের মতো এ দেশের পুলিশ সদস্যদের ভারী কোনো অস্ত্র ছিলোনা। থ্রি নট থ্রি দিয়ে মোকাবেলা করেছে শত্রু পক্ষের। প্রতিরোধ যেন গড়ে তোলা না যায় সেজন্য পাকসেনারা পরিকল্পনা করে আগেই পুলিশ লাইনসের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
অন্ধকারেই সারারাত যুদ্ধ করে টিকে থেকে শেষ পর্যন্ত ভোরে শাহজাহানসহ ১শ জন বন্দি হয় পাকসেনাদের হাতে। এরপর ২৮ মার্চ মুক্ত হয়ে পায়ে হেঁটে নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান তিনি।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেশখলায় ১০ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন শাহজাহান। মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
কিন্তু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে আজও পূরণ হয়নি তার স্বাধীনতা পদক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা- জানালেন মুক্তিযোদ্ধা শাহ্জাহান।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
এসএইচ