শুক্রবার (২৪ মার্চ) দিবাগত রাত ১০ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের নলসাটা দড়িপাড়া গ্রামে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিল উদ্দিন রাশেদ ও আমিনুর রহমান, কনস্টেবল জিয়াউর রহমান, নজরুল ইসলাম, মো. মনির হোসেন ও আনসার মনির হোসেন।
আহত এলাকাবাসীরা হলেন হৃদয় রোজারিও (৩৫), অনিক রোজারিও (২১), ধ্বনি (৪৫), মন্দিরা (৪৫), প্লাসিড রোজারিও (৩২) ও রাজীব রোজারিও (২৮) সহ আরও বেশ কয়েকজন।
স্থানীয় মিনা ক্রুশ জানান, শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে দুই উপ-পরিদর্শক ও তিন কনস্টেবল তার ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। এ সময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা থানার লোক বলে জানান। তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক না থাকায় ও পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে বাড়ির লোকজন ডাকাত বলে চিৎকার করে। চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এসে অনুপ্রবেশকারীদের আটক করার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংর্ঘষ বাঁধে। পরে তারা বারান্দার একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন।
পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশে খবর দিলে এসআই নাজমুল হক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে থানার ওসি মো. আলম চাঁদ ২০/২৫ জনের ফোর্স নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর অতর্কিত হামলা, লাঠিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে জানান মিনা ক্রুশ।
পুলিশের হামলা ও লাঠিচার্জে দীনেশ রোজারিও’র পুত্র হৃদয় রোজারিও (৩৫), অমল রোজারীও’র পুত্র অনিক রোজারিও (২১), অনীল দরেশের স্ত্রী ধ্বনি (৪৫), অরুন দরেশের স্ত্রী মন্দিরা (৪৫), জেবিয়ার রোজারিও’র পুত্র প্লাসিড রোজারিও (৩২) ও সুবল রোজারিও’র পুত্র রাজীব রোজারিও (২৮) গুরুতর আহত হন।
পরে পুলিশের লাঠিচার্জ ও গুলির ভয়ে এলাকাবাসী বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরে গেলে পুলিশের ৫ সদস্য ও আনসার সদস্যকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ ফোর্স। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক কবির হায়দার জানান, কালীগঞ্জ থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ দত্ত জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ওই এলাকায় এক বাড়িতে মাদক অভিযানে যায়। পরে অভিযান চালানোর সময় বাড়ির মাদকাসক্ত কিছু লোকজন তিন পুলিশকে ঘরের ভেতর আটক করে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে। পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে জনতার লাঠির আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হলে থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
আরএস/এমজেএফ