ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা থেকেই শিশুদের জন্য কিছু করার আহ্বান কৈলাশের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
ঢাকা থেকেই শিশুদের জন্য কিছু করার আহ্বান কৈলাশের বক্তব্যে কৈলাশ সত্যার্থী, ছবি: দীপু মালাকার

বিআইসিসি থেকে: সারাবিশ্বে ২৩ কোটি শিশু সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে বলে জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী, শিশু অধিকার কর্মী কৈলাশ সত্যার্থী।

তিনি বলেন, এই শিশুদের জীবন ও শিক্ষা বিপদগ্রস্ত। যৌথভাবে এর সমাধান আমাদের দায়িত্ব।

টেকসই উন্নয়নে এর জন্য ফ্রেম ওয়ার্ক দরকার। আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাবো এই বিপদগ্রস্ত শিশুদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসুন।

‘আজই সময়, এই ঢাকা থেকেই আমাদের শিশুদের জন্য কিছু করার বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,’ যোগ করেন কৈলাশ সত্যার্থী।
 
রোববার (০২ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৩৬তম ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন-আইপিইউ সম্মেলনে সাধারণ আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘রিড্রেসিং ইনইকুয়েলিটিজ: ডেলিভারিং অন ডিগনিটি অ্যান্ড ওয়েল বিয়িং ফর অল’ (বৈষম্যের প্রতিকার: সবার জন্য মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা)।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই সাধারণ আলোচনায় আরও ছিলেন, আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী, আইপিইউ সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগং প্রমুখ।
আইপিইউ সম্মেলনে সাধারণ আলোচনায় উপস্থিত বক্তারা, ছবি: দীপু
কৈলাশ সত্যার্থী বলেন, সারাবিশ্বে সব শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মাত্র ২২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। যা মাত্র ৩ দশমিক ৫ দিনের সামরিক ব্যায়ের সমান। আমি বিশ্বাস করি না এই অর্থ ব্যায় করার ক্ষমতা বিশ্বের নেই। তাই এখান থেকেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত শিশুদের কল্যাণে কাজ করার জন্য। বিশেষ করে শিল্পে উন্নত ও উন্নত দেশগুলোর শিশু কল্যাণে নেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
 
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী আয় বৈষম্যই হচ্ছে অর্থনৈতিক সহিংসতা। এই সহিংসতা মানব জাতির নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য বড় ধরনের হুমকি।
 
কৈলাশ সত্যার্থী আয় বৈষম্যের একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কয়েক দশক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন সিইও ২০ জন শ্রমিকের সমান আয় করতেন। আর এখন এই বৈষম্য বেড়ে ১:২০০-তে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের ৫০ শতাংশ মানুষের সমপরিমাণ সম্পদ মাত্র ৮ জন ধনীর কাছে। দিন দিন এই বৈষম্য বাড়ছেই।
 
তিনি বলেন, আমরা যখন এই সম্মেলন করছি তখন ২৭০ মিলিয়ন শিশু স্কুলে যেতে পারছে না। ২১ মিলিয়ন মানুষ বিক্রি হয়ে শ্রম দাসে পরিণত হয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না, সহ্য করা যায় না।
 
একদিকে ১০০ মিলিয়ন শিশু দাসত্ব, পাচার ও শিক্ষাবঞ্চনাসহ বিভিন্ন সহিসংতার শিকার হচ্ছে অন্যদিকে ১০০ মিলিয়ন তরুণ রয়েছেন যারা চাচ্ছেন পৃথিবীকে বদলে দিতে। তাদের পৃথিবী বদলে দেওয়ার শক্তি, ক্ষমতা ও আদর্শ আছে। আমরা কি এই তরুণদের পাশে দাঁড়াতে পারি না?
 
উপস্থিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে এই শিশু অধিকার কর্মী বলেন, আমরা যদি এই শক্তিকে কাজে লাগাতে না পারি, তবে তারা হতাশাগ্রস্ত, অসহিষ্ণু এবং সহিংস হয়ে পড়বে। তরুণদের ক্ষমতা যদি নিশ্চিত করা যায়, তাদের কথা যদি শোনা হয়, তাহলে এই পৃথিবী আরও আনন্দময় এবং শক্তিশালী হবে। পৃথিবীকে সুন্দর করতে তরুণদের শক্তি আছে, আদর্শ আছে, সম্ভাবনা আছে।

সারা বিশ্বে শিশুরাই বাল্য বিয়ে ও শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদেরও (এমপি) দাঁড়ানো উচিত। বিশ্বের সব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার জন্য মাত্র ২২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। যা বিশ্বের ৩ দশমিত ৫ দিনের প্রতিরক্ষা বাজেটের সমান।

কৈলাশ আরও বলেন, আজই সময়, এই ঢাকা থেকেই আমাদের শিশুদের জন্য কিছু করার বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সহানুভূতি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার এখনই সময়।

তিনি আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ স্কুলে গিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
 
নারীর ক্ষমতায়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, যদি নারীকে আমরা সমভাবে ক্ষমতায়িত করতে পারতাম তাহলে গত ৫ হাজার বছরের সভ্যতার ইতিহাসে অনেক সমস্য আমাদের মোকাবেলা করা লাগতো না। যা এখন আমোদের করতে হচ্ছে।
 
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর এ বিষয়ে সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। এতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এসএম/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।