ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অটিস্টিক শিশুদের তাক লাগানো পরিবেশনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
অটিস্টিক শিশুদের তাক লাগানো পরিবেশনা প্রতিবন্ধী শিশুদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী-ছবি- পিআইডি

ঢাকা: নানা কারণে বিভিন্ন সময় অবহেলার শিকার হন প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক জনগোষ্ঠী। কিন্তু সুপ্ত প্রতিভার বিকাশের সুযোগ দিলে তারাও যে পারদর্শিতা দেখাতে পারে আবারো তার প্রমাণ মিললো দশম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। অসাধারণ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সবাইকে মুগ্ধ করেছেন অটিস্টিক শিশুরা।
 
 

রোববার (০২ এপ্রিল) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ‘এগিয়ে যাবো বাধা মানি না’ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর নীল বাতি জ্বালিয়ে অটিজম সচেতনতা দিবসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঞ্চ থেকে নেমে দর্শক সারিতে এসে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, বুকে টেনে আদর করেন শিশুদের।
 
এরইমধ্যে শুরু হয় প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের উপস্থাপনা ও পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
 
শুরুতে একটি মুজিবরের কণ্ঠ থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠ শুনি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের কণ্ঠে গানটির সঙ্গে নৃত্য ও ডিসপ্লের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
এরপরই বৈঠার তালে নৌকার এগিয়ে চলা, নদীতে ঢেউয়ের ডিসপ্লে প্রদর্শনের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
 
গানের সঙ্গে নৃত্য এবং ডিসপ্লের মাধ্যমে ষড়ঋতুর বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র্য ও মানুষের জীবন চিত্র তুলে ধরা হয়।
 
প্রতিটি পরিবেশনায় পর যখন মুর্হূমুর্হূ করতালি দিচ্ছেন দর্শক, অতিথিরা। ঠিক তখনই অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশনা নিয়ে হাজির হয় শিশুরা। দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখায় তারা।
 
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘হারজিত চিরদিন থাকবে, বাধা বিঘ্ন না পেরিয়ে বড় হয়েছে কে কবে..’ এ গান এবং সেই সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে শিশুরা।
 
‘আমার মাইজ্জা ভাই, সাইজ্জা ভাই কই গেলারে, চল যাই ক্ষেতে ধান কাটিতে...’ এ গানের সঙ্গে নবান্ন উৎসবের চিত্র তুলে ধরে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুরা। ধান কাটা ও সংগ্রহ নিয়ে কৃষাণ-কৃষাণীর ব্যস্ততা, তাল পাতার পাখায় বাতাস করতে করতে ক্লান্ত কৃষকের পাতে ভাত তুলে দিচ্ছেন গৃহবধূ। এসব দৃশ্য কিছু সময়ের জন্য দর্শকদের গ্রামের নবান্ন উৎসবে নিয়ে যায়।
 
অনুষ্ঠানের সবশেষে ‘কোন বাধা দমাতে পারবে না’-এ প্রত্যয় নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে কিছু পিছিয়ে পড়া সুপ্ত প্রতিভার অধিকারী এসব শিশুরা পরিবেশন করে ‘চল এগিয়ে যাবো বাধা মানি না, জয় হবেই হবে; ভয় করি না..’ এ গান ও নৃত্য।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও উপস্থিত অতিথিদের পুরো অনুষ্ঠান দারুণভাবে উপভোগ করতে দেখা যায়।
 
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। তাদের অনেককে জড়িয়ে ধরে আদর করেন।  
 
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
 
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিথ ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭ 
এমইউএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।