ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বড়বাড়ির ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে দুর্বিষহ জনজীবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
বড়বাড়ির ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে দুর্বিষহ জনজীবন সড়কের পাশে ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বড়বাড়ি, গাজীপুর ঘুরে: এক খণ্ড নরক যন্ত্রণার বিভীষিকা যেন গাজীপুরের বড়বাড়ি। স্থানীয়রা তো বটেই, ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী মানুষজনের কাছেও এ স্পট যেন দুর্বিষহ দুর্গন্ধের উপত্যকা। 

গাজীপুরের ময়লা আবর্জনার স্তূপে পরিবেশ বিপর্যয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এ বড়বাড়ি।  

এখানকার আকাশও যেন দূষিত বাতাসে হয়েছে ভারী।

এতে করে বিপন্ন হয়ে পড়েছে এখানকার জীবন। স্থানীয় জনজীবনেও সৃষ্টি করেছে মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার। দম বন্ধ করা অবস্থায় নাভিশ্বাস উঠেছে পথচারী ও চলাচলকারীদের।

দুর্গন্ধে ভরা বাতাসের কারণে শ্বাসকষ্ট, জন্ডিস, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা।  

এ নিয়ে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ আর পরিবেশ দূষণ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ময়লা-আবর্জনার এ ভাগাড়ের দৃশ্য চোখে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রতিদিন উৎপাদিত ময়লা আবর্জনার বেশিরভাগই প্রতিদিন ফেলে রাখা হয় এখানে। অনেক সময়ই দীর্ঘ সড়কের ওপরের খোলা জায়গায়ও ময়লা ফেলা হয়।

রীতিমতো ডাম্পিং স্টেশনে রূপ নেওয়া এ বড়বাড়ি এখন মারাত্মক সামাজিক সমস্যায়ও পরিণত হয়েছে।  

জানা যায়, ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী কয়েক হাজার যানবাহনের যাত্রী এবং পথচারীরা গাজীপুরের বড়বাড়ি পাড়ি দেওয়ার সময় দারুণ অস্বস্তির মধ্যে পড়েন।  

এসব যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের এই স্থানটি পার হওয়ার সময় নাকে রুমাল চেপে চলাচল করতে হয়।  

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী এনা পরিবহনের এক চালক বাংলানিউজকে বলেন, দুর্গন্ধের কারণে দ্রুত এ স্পট পাড়ি দিতে হয়। অনেক চালক এ দুর্গন্ধময় স্থান পাড়ি দেওয়ার সময় গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন।  

আলাপ হলো স্থানীয় রিকশা চালক হাতেম আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, নাক-মুখ চেপে ধরে আমাদের পথ চলতে হয়। সিটি কর্পোরেশন দুর্গন্ধ দূর করতে ন্যূনতম ব্লিচিং পাউডারও ছিটায় না।

তাদের গাফিলতিতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ-ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। রোদ-বৃষ্টিতে এখানে দুর্গন্ধের মাত্রা আরও প্রকট হয়ে উঠে বলে জানান রিকশার যাত্রী সোহেল মিয়া (৩৫)।  

স্থানীয় আরও কয়েকজন জানান, এখানে ফেলা ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনা থেকে হাসপাতাল-ক্লিনিকের আবর্জনাকে আলাদা করা হয় না।  

স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এসব আবর্জনা আলাদা না করে এখানে ইচ্ছামতো ফেলা হয়। নিক্ষিপ্ত ময়লা-আবর্জনার তালিকায় রয়েছে ব্যবহৃত সুঁচ, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ ও ব্যান্ডেজ।  

ময়লা আবর্জনায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে এক চিকিৎসক বলেন, দূষিত বাতাসের ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। আর শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস বি, জন্ডিস, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এমএএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।