হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় কালনী, কুশিয়ারা ও ভেড়ামোহনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ১৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় কৈয়ার ঢালার ২৬ কিলোমিটার বাঁধ ডুবে যেতে পারে।
তাতে কৈয়ার ঢালা প্রকল্পের ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যাবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে আশে-পাশের হাওরগুলোও। এসব বাঁধ ভেঙে গেলে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাবে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার এক লাখ ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে এরই মধ্যে ১৩ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে বানিয়াচং উপজেলায় পাঁচ হাজার ৮৫০ হেক্টর এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় চার হাজার ৯৫ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এই সময়ে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, তা নজির বিহীন। তিনি আরো জানান, ফসল ডুবে এই মৌসুমে এখনো পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর পানি বাড়ছে। নদীর বাল্লা পয়েন্টে এখনই বিপদসীমার এক মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। হবিগঞ্জ শহরেও পানি বাড়ছে। ভারত থেকে নদীতে পানি প্রবেশ করছে। নদীর নিম্ন এলাকা বানিয়াচং উপজেলার হেলারকান্দিতে বাঁধ রক্ষার্থে বুধবার সারাদিন প্রায় দুইশ’শ্রমিক কাজ করেছেন। জেলার অন্যান্য নদীগুলোতেও পানি বাড়ছে।
এদিকে বিগত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে হরিপুর, শ্যামলী, মোহনপুর ও শায়েস্তানগর এলাকার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, আগাম বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসন বুধবার বিকেল জরুরি সভা করেছে। সভায় জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম প্রত্যেক সরকারি বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৭
এসআই