বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির আবাসন প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা না করে এই বাহিনীর অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমার খারাপ লাগে এই যে দিনরাত পরিশ্রম করা..সব সময় একটা চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করা। প্রশংসা করবে, সাধুবাদ দেবে, উৎসাহ দেবে.. তা না করে এটা হল না কেন, ওটা হল কেন? এটা হলে ওটা হত। নানা জ্ঞান ছড়াতে থাকে। যাদের দায়িত্ব নেই তারা অনেক কিছুই বলতে পারে। ’
অনুষ্ঠানে পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি (পিওএইচএস) প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পুলিশ কর্মকর্তাদের আবাসনের চিন্তা দূর হবে।
শহরের ওপর চাপ কমাতে ঢাকার আশপাশে, বিভাগীয় ও জেলা শহরে এ ধরনের আরো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশকে আবাসন প্রকল্প গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক, পুলিশ অফিসার্স সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দসহ ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে আইজিপি স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর পুলিশ অফিসার্স সমবায় সমিতির দপ্তর সম্পাদক ও এআইজি ডেভেলপমেন্ট গাজী মোজাম্মেল হক পিওএইচএস প্রকল্পের এক পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন। প্রধানমন্ত্রী আবাসন প্রকল্পের একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) থেকে আইজিপি পর্যন্ত ২৩ জনকে বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করে (প্রতীকী হস্তান্তর) কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর খিলক্ষেতের বড়–রা এলাকার ৩০০ ফুট রাস্তার পাশে ১৪৩ একর জমিরে ওপর বাস্তবায়িত হচ্ছে পিওএইচএস প্রকল্প। এই প্রকল্পে এএসপি থেকে আইজিপি পর্যন্ত ১১শ’ কর্মকর্তাকে প্লট বরাদ্ধ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের আবাসিক এলাকাটিতে ৫৭ শতাংশই হবে আবাসিক ভবন। ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ জায়গায় থাকবে রাস্তা ও ফুটপাত। এ ছাড়া ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ জায়গায় পাঁচটি স্কুল, চারটি কলেজসহ সামাজিক সুবিধাগুলো থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রকল্পটির এক পাশে দেশের সবচেয়ে অভিজাত আবাসিক এলাকা বসুন্ধরা। কাছে পূর্বাচল উপশহর এলাকা। পিওএইচএস বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের পরিকল্পিত নগরায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। পুলিশের কর্মকর্তাদের নিরাপদ আবাসনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও উন্নতি ঘটবে। এই প্রকল্পে বর্তমানে সড়ক নির্মানের কাজ চলছে। ২০০৭ সালের আগে যারা বিসিএস কর্মকর্তা তারাই প্লট বরাদ্দ পাচ্ছেন সেখানে। ২০০৭ সালের পর থেকে পুলিশে যোগদান করা এক হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা এই সুবিধা পাবেন না। এছাড়া পরিদর্শক ও উপপরিদর্শকদের (এসআই) এখনই সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল পুলিশ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব বিষয় তুলে ধরলে তিনি ঢাকার বাইরে আরো আবাসিক প্রকল্প তৈরির নির্দেশনা দেন। পুলিশের বহুমুখী সমবায় সমিতির সংশ্লিষ্টরাও তাদের আরো প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনার কথা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৭
জেডএম/