ঢাকা, রবিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খ্যাতির সুযোগে দইয়ের ওজনে শুভঙ্করের ফাঁকি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৭
 খ্যাতির সুযোগে দইয়ের ওজনে শুভঙ্করের ফাঁকি! বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি দেশজুড়ে-ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। সুনাম ছড়িয়েছে দেশের বাইরেও। আর এ সুযোগে দইয়ের ওজনে চলছে  শুভঙ্করের ফাঁকি! কৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রতি পিস সরা দই প্রতি কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন দোকানিরা।

ক্রেতাদের অভিযোগ, বাস্তবে প্রতি সরায় সাড়ে পাঁচশ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ গ্রাম দই থাকছে। কয়েক বছর আগে সাড়ে সাতশ’ থেকে সাড়ে আটশ’ গ্রাম পর্যন্ত দই থাকলেও ক্রমে কমে আসছে পরিমাণ।

তবে দাম কিন্তু বেড়েই চলেছে।

বগুড়া শহর ও দইয়ের জন্মস্থান খ্যাত শেরপুর উপজেলায় সরেজমিনে দেখা গেছে, খ্যাতির দই বেচা-বিক্রির জন্য দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোয় গড়ে তোলা হয়েছে নামি-দামি অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি দেশজুড়ে-ছবি: আরিফ জাহান ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সাজানো হয়েছে। বাহারি ডিজাইনের টাইলস বিছানো ও গ্লাস ঘেরা ঘরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দইয়ের পসরা। এসব দই গুণে-মানে ও স্বাদে অতুলনীয়।

অভিযোগ উঠেছে, বাহারি এ সাজ-সজ্জার আড়ালে ওজনে কম দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে ক্রেতাদের সঙ্গে। এক সরা দই দিয়ে বিক্রেতারা হাতিয়ে নিচ্ছেন এক কেজির দাম।

ক্রেতারাও সরল বিশ্বাসে কেজি হিসেবে দাম দিয়ে কিনে প্রতি সরায় পাচ্ছেন সাড়ে পাঁচশ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ গ্রাম দই। দিন যতো যাচ্ছে, সরায় ভরা দইয়ের ওজন ততোই কমে আসছে বলেও অভিযোগ অনেকের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানের কর্মচারীরা আগের ধারাবাহিকতায় প্রতি পিস সরা দই প্রতি কেজি হিসেবে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন। বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি দেশজুড়ে-ছবি: আরিফ জাহানতারা বাংলানিউজকে বলেন, ‘নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা কুমোর শিল্পীদের কাছে অর্ডার দিয়ে দই ভরানোর সরা বানিয়ে নেন। সরার আকার বড় দেখালেও গভীরতা অনেক কম থাকে। এ ধরনের সরা অনেক কম দইয়ে ভরে যায়। একেক সময় মালিকেরা একেক মাপের সরার অর্ডার দেন। আর ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কুমোর শিল্পীরাও মালিকদের অর্ডার অনুসারে সরা তৈরি করে দেন’।

এসব কর্মচারীরা আরও বলেন, ‘বছরের পর বছরের ধরে সরা হিসেবে দই বিক্রি হয়ে আসছে। ক্রেতাদের কাছে প্রতি পিস সরাকে প্রতি কেজি বলা হচ্ছে। সরাগুলো মাটির তৈরি হওয়ায় ওজন করে দেখার সুযোগ কম’।

‘আর কেউ ওজন করে নিতে চাইলে তার কাছে দই বিক্রি করা হয় না। ফলে ক্রেতারা আগের নিয়মেই দই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ক্রেতারা ঠকছেন, লাভবান হচ্ছেন দই মালিকেরা’- যোগ করেন কর্মচারীরা।

তারা বলেন, ‘নাম দিয়ে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে কোনো প্রতিষ্ঠানে আমাদের চাকরি থাকবে না’।   

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৭
এমবিএইচ/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ