ঢাকা, রবিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

তিস্তা ‘গুরুত্বপূর্ণ’: মোদি, শিগগির ‘সমাধান’: হাসিনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৭
তিস্তা ‘গুরুত্বপূর্ণ’: মোদি, শিগগির ‘সমাধান’: হাসিনা আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি

হায়দ্রাবাদ হাউজ (নয়াদিল্লি) থেকে: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তিস্তা। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিস্তা বিষয়ে শিগগির সমাধান আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দুই নেতা একান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করে কথা বলেন। তাদের ব্রিফিংয়ের আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২২টি চুক্তি সই হয়।

ব্রিফিংয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, তিস্তা ইস্যু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূণ বিষয়। কেবল শেখ হাসিনার সরকার ও আমার সরকারই পারে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যুর দ্রুত সমাধান করতে।

আর শেখ হাসিনা বলেন, আমরা (মোদি ও হাসিনা) তিস্তা ইস্যুতে আলোচনা করেছি। আমি বিশ্বাস করি আমরা শিগগির এ বিষয়ে সমাধান পাবো।

ব্রিফিংয়ে প্রথমে বক্তব্য রাখেন মোদি। তিনি শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, আপনি এমন একটি সময় ভারত সফর করছেন, যে সময়টি পহেলা বৈশাখের ঠিক আগে। আমি বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানানোর এ সুযোগটি নিতে চাই। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, শুভ নববর্ষ।

শেখ হাসিনার ভারত সফর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের আরেকটি সোনালি অধ্যায় মন্তব্য করে মোদি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে আমরা আরেকটি সোনালি অধ্যায়ের (গেল্ডেন এরা) মধ্য দিয়ে গেলাম। যা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, অর্জন, অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেবে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটা আমাদের গভীরভাবে ছু‍ঁয়ে গেছে। আপনার দেশের পক্ষ থেকে দেওয়া এ শ্রদ্ধা শহীদ পরিবারের সদস্যরা মনে রাখবে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সঙ্গে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অংশীদারিত্ব নিয়ে ব্যাপক ও ফলপ্রস‍ূ আলোচনা হয়েছে।

সম্পর্কের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নতুন দিক উন্মোচন ও নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে দুই নেতা আলোচনায় একমত হয়েছেন জানিয়ে মোদি বলেন, যৌথভাবে আমরা নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে আলোচনা করেছি, বিশেষ করে আমরা হাই টেকনোলজির ক্ষেত্রে জোর দিয়েছি, যা দু’দেশের তরুণ প্রজন্মকে যুক্ত করে। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক্স, সাইবার সিকিউরিটি, সিভিল নিউক্লিয়ার এনার্জি এবং অন্য‍ান্য খাত নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে।  

বাংলাদেশের উন্নতির ক্ষেত্রে ভারত সবসময় একজন শুভাকাঙ্ক্ষী উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা দীর্ঘকাল ধরেই একে অপরের বিশ্বাসী বন্ধু। আমাদের একসঙ্গে এ পথচলা দু’দেশের জনগণের মঙ্গল বয়ে আনবে এবং তা নিয়ে কাজ করতে আমরা দু’দেশই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ জায়গা থেকে আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, বাংলাদেশের অগ্রাধিকার খাতে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা করবে ভারত।  

‘এনার্জি সিকিউরিটিজ আমাদের উন্নয়ন অংশীদারিত্বে একটি বড় খাত এবং এটি দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছে, আজ আমরা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অতিরিক্ত হিসেবে যোগ করেছি। বর্তমান আন্তঃসংযোগ থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।  

বক্তৃতায় আরও কিছু সহযোগিতা প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন নরেন্দ্র মোদি।

তারপর দেওয়া বক্তৃতায় ভারতকে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। সঙ্গে আমরাও।

তিনি বলেন, মোদি ও আমি একটি কার্যকর বৈঠক করেছি। নতুন উচ্চতার বৈঠক হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাস ও খুলনা-কলকাতা ট্রেন সার্ভিস চালু ছাড়াও বৃহত্তর যোগাযোগের জন্য দু’দেশ কাজ করছে।

হিন্দি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী অনূদিত করায় কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।  

তিনি বৈঠকের আলোচনার বিষয় তুলে ধরে বলেন, আমরা পাট রপ্তানি বিষয়ে কথা বলেছি। দু’দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে কথা হয়েছে। যৌথ নদী ও এগুলোর পানিবণ্টন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

এসময় মোদির বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনার জন্য ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। বলেন, তিনি নিজের দেশকে যেমন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককেও।

এরপর বাংলায় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ১৪ এপ্রিল আম‍াদের বাংলা বছরের প্রথম দিন। আমি বাংলায় বলতে চাই, আগাম শুভেচ্ছা। আমাদের দু’দেশের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, তা শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সহযোগিতা করেছে। এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, সবসময় ভারতবাসীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের সম্মান জানাতে পারছি, এটা শুধু তাদের নয়, আমাদের জন্যও সম্মানের।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক বলেও শুভকামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৭
আইএ/এসএনএস/কেজেড/এমএমকে/এইচএ/এএ/

আরও পড়ুন
** এ সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেবে
** ভারত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী
** বাংলায় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন মোদি
** বাংলাদেশ-ভারত ২২ চুক্তি সই
** ভারতীয় সেনাদের সম্মাননার সিদ্ধান্ত হৃদয় ছুঁয়েছে
** হিন্দিতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন
** সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে বৈঠকে হাসিনা-মোদি

** গান্ধীজি অনুপ্রেরণার প্রতীক, লিখলেন হাসিনা​
** শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার নয়াদিল্লিতে
** আজ আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা, একান্ত বৈঠক ও চুক্তি স্বাক্ষর
**হাসিনার সঙ্গে সুষমা স্বরাজের সাক্ষাৎ
** প্রণব-মোদি-সোনিয়াদের জন্য ঝুড়ি ঝুড়ি উপহার হাসিনার
** আমি অভিভূত, বললেন প্রধানমন্ত্রী
** সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মোদি
** দিল্লিতে হাসিনার আগমনে মোদির চমক
** তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী শেখ হাসিনা

** দিল্লিতে হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন মোদি
** নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
** হাসিনার শহীদ সম্মাননা তালিকায় অংশুয়ার বদলে সুগন সিং

** প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে দিল্লির পথে ডানা মেললো আকাশপ্রদীপ​
** দু’দেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় নেবে হাসিনার সফর
** ৬ মন্ত্রী ২৫ সচিবসহ ৩৫১ সফরসঙ্গী প্রধানমন্ত্রীর

**ভারতীয় ৭ শহীদের স্বজনদের ক্রেস্ট দেবেন প্রধানমন্ত্রী
** গুরুত্বপূর্ণ সফরে শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন হাসিনা 
** মমতা রাজি না হলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে রফা তিস্তা ইস্যুর
** তিস্তায় কত জল!
** শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে নয়াদিল্লিতে সাজ সাজ রব
** শহীদ সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলায়
** সোনিয়ার সঙ্গে রাহুলও আসছেন হাসিনা সাক্ষাতে

** ‘তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি অসম্ভব নয়’
**তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী শেখ হাসিনা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ