ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ভর্তির ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে রাজধানীর প্রথমসারির ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গত ৮ জানুয়ারি চিঠি পাঠায় দুদক। চিঠিতে ১২ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিতে বলা হয়। কিন্তু ১২ জানুয়ারির মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুদককে তথ্য না দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তখন দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, হয়তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য পাঠিয়েছে, কিন্তু তাদের হাতে আসতে সময় লাগছে।
শুধু তাই নয়, দুদক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে ১২ জানুয়ারির পর। এই কমিটিকে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু বর্তমান সময় অবধি এখনো কোনো তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেয়নি তদন্ত কমিটি।
দুদকের চিঠি পাঠানো ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অগ্রণী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমণ্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চবিদ্যালয়, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মণিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ এবং রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণির ভর্তিতে নেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৮০০ টাকা। এছাড়া গত বছর মাসিক বেতন ছিল ৮০০ টাকা। এ বছর বেতন ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে মাসিক বেতনই বাড়ানো হয়েছে ৩শ’ টাকা। মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্লে-গ্রুপেই ভর্তিতে এবার নেওয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান করা হয় দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলিকে। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তদন্ত এখনো চলছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হবে। তারপর কমিশনে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। আর এসএসসি পরীক্ষার কারণে তদন্ত বন্ধ ছিলো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, কমিশন একটি তদন্ত টিম গঠন করে। তাদেরকে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কারণে তদন্ত বন্ধ ছিলো। খুব শিগশিরই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবে।
তদন্ত কমিটি নির্ধারিত কমিশনের কাছে সময় বাড়ানোর কোনো আবেদন করেছে কিনা, কিংবা কমিশন সময় বাড়িয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এটা তদন্ত কমিটির প্রধান বলতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯,২০১৭
এসজে/জেডএম