ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সংসদে কোরাম সংকটে ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৭
সংসদে কোরাম সংকটে ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র কর্মকর্তারা

ঢাকা: ‘দশম জাতীয় সংসদের সপ্তম থে‌কে ত্র‌য়োদশ অধিবেশন পর্যন্ত কোরাম সংকট হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা ২৬ মি‌নিট (প্রতি অধিবেশনে গড় কোরাম সংকট ২৮ মি‌নিট ধ‌রে)। এ সাত অধিবেশনে কোরাম সংকটেই ব্যয় হয়েছে  ৪৭ কো‌টি ২০ লাখ ৩৩ হাজার ২০৪ টাকা। সংসদ অ‌ধি‌বেশন প‌রিচালনায় প্র‌তি মি‌নি‌টের গড় ব্যয় ১ লাখ ৬২ হাজার ৪৩৪ টাকা ধ‌রে এ হিসাব করা হয়’।

রোববার (০৯ এ‌প্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মাইডাস সেন্টা‌রে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে দশম জাতীয় সংস‌দের সপ্তম থে‌কে ত্র‌য়োদশ অ‌ধি‌বেশন পর্যন্ত গ‌বেষণা প্র‌তি‌বেদ‌নে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান,  ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালসহ সদস্যরা এবং উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্স অ্যান্ড পলিসি) জুলিয়েট রোজেটি ও অ্যাসিসট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ‌বেষণা প্র‌তি‌বেদ‌নে বলা হয়েছে, ‘ওই সাতটি অধিবেশনে সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে ২ হাজার ১০১ বার আলোচনা হয়। একইভাবে অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার অব্যহত রয়েছে (আক্রমণাত্মক, কটু  ও অশ্লীল শব্দ)। সংসদ অধিবেশনের মোট সময়ের ১৫ শতাংশ অসংসদীয় ভাষার ব্যবহারে  ব্যয় হয়েছে’।

প্র‌তি‌বেদ‌নে বলা হয়, ‘সংবিধান অনুসারে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো চুক্তি ছাড়া সকল আন্তর্জাতিক চুক্তি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপনের কথা থাকলেও  একটি চুক্তিও উপস্থাপিত হয়নি। এ সময়ে ৫৯টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে’।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘সাতটি অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ছিলো ১০৩ দিন। এতে মোট সময় ব্যয় হয়েছে ৩৪৫ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট (প্রতি কার্যদিবসে গড় বৈঠককাল ৩ ঘণ্টা ২২ মিনিট ধরে)। এর মধ্যে প্রতিনিধিত্বমূলক আলোচনায় ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ সময় ব্যয় করা হয়েছে। আর আইন প্রণয়নে ব্যয় করা হয়েছে ১৬ শতাংশ সময়। বাকি ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ সময় ব্যয় হয়েছে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠামূলক আলোচনায়’।

সংসদে উপস্থিতির পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের গড় উপস্থিতি প্রতি কার্যদিবসে ২৩৩ জন, যা মোট সদস্যের ৬৭ শতাংশ।   এর মধ্যে আবার ৩৯ শতাংশ সংসদ সদস্য মোট কার্যদিবসের ৭৫ শতাংশের বেশি কার্যদিবসে, ৫ শতাংশ সদস্য ২৫ শতাংশ বা তার কম কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন। সরকারি দলের ৩৯ শতাংশ সদস্য অধিবেশনের ৭৫ শতাংশের বেশি কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন’।

‘নবম সংসদের ৫০ শতাংশ সদস্য ৭৫ শতাংশ কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন। সেক্ষেত্রে উপস্থিতির হার আগের তুলনায় কমেছে’।

সংসদকে আরও বেশি কার্যকর করতে সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে- সংসদ সদস্য আচরণবিধি বিলের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন-পরিবর্ধন সাপেক্ষে সংসদে উত্থাপন, চূড়ান্ত অনুমোদন ও আইন হিসেবে প্রণয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, সংসদে অধিকতর শৃঙ্খলা রক্ষাসহ অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার বন্ধে বিধি অনুসারে স্পিকারের আরও জোরালো ভূমিকা পালন, সরকারের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় প্রধান বিরোধী দল প্রকৃত বিরোধী দলসুলভ ভূমিকা পালনে আগ্রহী হলে তাদের দ্বৈত অবস্থান থেকে সরে আসা, আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো সদস্যদের আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশযোগ্য নয়- এমন বিষয় ছাড়া অন্য আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিস্তারিত ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং বিরোধী দলের যৌক্তিক প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা।

বাংলা‌দেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, এ‌প্রিল ০৯, ২০১৭
এসএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ