রোববার (০৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন মামলায় বিশেষ করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের মামলাসহ অনেক মামলা ‘মুফতি’ হান্নানের বিরুদ্ধে রয়েছে।
শনিবার (০৮ এপ্রিল) সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ‘মুফতি’ হান্নানসহ তিন জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। অন্য দুই জঙ্গি হচ্ছেন- দেলোয়ার হোসেন রিপন ও শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল।
মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ও রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে এখন জেলকোড অনুসারে ফাঁসি কার্যকর করবে স্ব স্ব কারা কর্তৃপক্ষ।
প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর ফাঁসি কার্যকরে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জেলকোড অনুসারে ২১ দিনের কমে নয় এবং ২৮ দিনের ঊর্ধ্বে নয়- এ সময়সীমার মধ্যে কার্যাদেশ পালন করতে হবে। আমরা সেজন্যই অপেক্ষা করছি। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। সব ফর্মালিটি শেষ হলেই আমরা রায় কার্যকর করবো’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব কিছু সময় মতো হবে। আমরা কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাবো না। আপনারা জানেন, ২১ দিন হতে হলে কতো সময় লাগবে। আমরা প্রহর গুণছি। শেষ হলেই আপনারা দেখবেন’।
গত ২৭ মার্চ পৃথকভাবে ‘মুফতি’ হান্নান, বিপুল ও রিপন স্ব স্ব কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে রাষ্ট্রপতি বরাবরে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। তাদের আবেদনগুলো ওইদিনই রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। দুই মন্ত্রণালয় হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন।
কারা সূত্র জানায়, এখন আবার স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় হয়ে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি কারাগারে পৌঁছালে ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হবে।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন।
মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৫ আসামির মধ্যে ‘মুফতি’ হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিল করেন। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দুই আসামি ‘মুফতি’ হান্নান ও বিপুল।
গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ করে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। আসামিরা এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানালেও গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২১ মার্চ প্রকাশিত হলে পরদিন ২২ মার্চ তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে কারাগারে পাঠান বিচারিক আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এমআইএইচ/জিপি/এএসআর