রোববার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে দশম জাতীয় সংসদের সপ্তম থেকে ত্রয়োদশ অধিবেশন পর্যন্ত গবেষণা প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালসহ সদস্যরা এবং উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্স অ্যান্ড পলিসি) জুলিয়েট রোজেটি ও অ্যাসিসট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ‘সংবিধান যেহেতু বলছে, সবকিছুর মালিক জনগণ, কাজেই জনপ্রতিনিধিরা যখন জনগণের প্রতিনিধি হয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেবেন, তখন জনগণের মতামত নেওয়ার একটা ব্যাপার রয়েছে। অনেক কিছুই বলা হচ্ছে না, পরিষ্কার করা হচ্ছে না’।
সংসদ কার্যকর হওয়ার ব্যাপারে এখনও অনেক সন্দেহ রয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সংসদ কার্যকর হওয়ার মেকানিজমগুলো জনপ্রতিনিধিরা অনুসরণ করছেন না’।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদন থেকে এ উপসংহারে যাবেন না যে, টিআইবি বলেছে, এ সংসদ অনেক বেশি কার্যকর হচ্ছে। আমরা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলেছি, বিরোধী দল ওয়াক আউট করেনি, সংসদ বর্জন করেনি। তারা অনেক বেশি অংশগ্রহণ করেছে। তারা কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অন্যদিকে আমরা দেখি, সংসদ কার্যকর হতে জনগণের মতামতকে যে গুরুত্ব দিয়ে সংসদ পরিচালনা করার কথা, জনপ্রতিনিধিরা তাদের (জনগণের) সে মতামত, যে কথাগুলো নেওয়ার প্রয়োজন ছিলো এখন পর্যন্ত সে জায়গায় পৌঁছাননি’।
‘এছাড়া সংসদে অশ্লীল ভাষার ব্যবহারযুক্ত তর্ক, আক্রমণাত্মক শব্দ ব্যবহারের ঘাটতি দেখা যায়নি এ সংসদেও। সংসদের ওপর সরকারের আধিপত্যেরও কমতি নেই’।
বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান বিরোধী দল সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে এটাও ঠিক যে, তাদের কথাগুলোকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তারা যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন, সেটার সুরাহাও আমরা হতে দেখি নাই। সেটার একটাই কারণ, তাদের দ্বৈতমুখিতার কারণেই সেটা হয়েছে। তাদের উত্থাপিত কথাগুলো নিয়ে লেগে থাকতে পারেননি। এমন একটি জোরালো জায়গায় সংসদকে নিয়ে যেতে পারেননি, যেখানটায় সত্যিকার অর্থে সংসদ যারা পরিচালনা করছেন, তাদেরকে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলে দিতে পারেননি। একটা জায়গায় তারা চুপ হয়ে গেছেন। একটা সময় এসে তারা কথাগুলো আর বলতে পারছেন না। শুধু সংসদেই নয়, সংসদের বাইরেও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা সকালে এক কথা বলছেন, আবার বিকেলে আর এক কথা বলছেন। দ্বৈত ভূমিকার কারণে তারা চাপের মধ্যে আছেন’।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি জনগণের কাছে প্রকাশ না করে সংসদের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে’।
দ্বৈতমুখিতার কারণে সংসদে বিরোধী দল কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ফ্যাক্টের ওপর নির্ভর করে কাজ করতে হয়। তাদের শুরু থেকে যে আচরণ দেখেছি, তাদের প্রচেষ্টা দেখেছি, সংসদ কার্যকর হওয়ার জন্য। দ্বৈত ভূমিকার কারণে তারা সরকারের অংশ, আবার বিরোধী দলেও আছে। এর অবসান করতে পারলে আরও বেশি উন্নত হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এসএম/এএ/এএসআর
** সংসদে কোরাম সংকটে ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা