ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নববর্ষের হালখাতার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৭
নববর্ষের হালখাতার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা নববর্ষের হালখাতার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা-ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখকে উদযাপন করবে বাঙ‍ালিরা। বৈশাখকে ঘিরে থাকবে নানা সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও অনুষ্ঠান। আর এসব অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কাজ চলছেও অবিরাম।

তবে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান থাকলেও ব্যবসায়ীদের কাছে এর আলাদা একটি তাৎপর্য রয়েছে। কারণ নববর্ষের প্রথম দিনে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় আয়োজন করে হালখাতা অনুষ্ঠানের।

এদিনে ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের দেনা-পাওনার হিসাব সমন্বয় করে নতুন খাতা খুলেন। পুরনো সব দেনা পরিশোধ করার জন্য ক্রেতাদের কাছে আমন্ত্রণপত্রও পাঠান। হালখাতার দিনে ক্রেতাদের মিষ্টি মুখ করান ব্যবসায়ীরা।
 
আর তাই পহেলা বৈশাখে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন পুরনো ঢাকার ব্যবসায়ীরা।
 
রোববার (৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর শাঁখারিবাজার ও তাঁতিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পহেলা বৈশাখে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কোনো অংশে পিছিয়ে নেই ব্যবসায়ীরা।

এরই মধ্যে সব ক্রেতা ও অতিথিদের কাছে পোঁছে দেওয়া হয়েছে আমন্ত্রণপত্র। এখন শুধু বাকী রয়েছে নিজ নিজ দোকানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। তাই ব্যবসায়ীরা সব পণ্য নামিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন দোকান।

এছাড়া অনেক ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে, হালখাতা উপলক্ষে বিভিন্ন রঙ দিয়ে দোকানে সাজসজ্জাও করছেন।
 
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি তারা এখনও পুরাতন খাতার সব লেনদেনের হিসাবও করছেন। কেন না বছরের প্রথম দিনে তারা নতুন খাতা দিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরু করবেন। তাই পহেলা বৈশাখ আস‍া পর্যন্ত তেমন একটা কেনাবেচা তারা এখন করছেন না। হালখাতার অনুষ্ঠানটি যেন সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ করতে পারেন সে দিকেই এখন তাদের নজর।
ব্যবসায়ীরা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন দোকান-ছবি: কাশেম হারুনএবার তাঁতিবাজার ও শাঁখারিবাজার মিলিয়ে সর্বমোট দুই হাজার দোকানের হালখাতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে বলেও ব্যবসায়ীরা জানান।
 
তাঁতিবাজারের নিউ গোল্ড অ্যান্ড সিলভার হাউজের মালিক স্বপন শীল হালখাতার প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, হালখাতা উপলক্ষে আমরা এখন দোকানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। আগামী দু’দিনের মধ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া এরই মধ্যে আসা ক্রেতা ও অতিথিদের জন্য মিষ্টি এবং উপহার সামগ্রীর ব্যবস্থাও হয়ে গেছে। এখন শুধু বাকী লাল মলাটের নতুন খাতা কেনার।
 
লাল মলাটের খাতা দিয়েই কেনো হালখাতা করা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বপন শীল বলেন, লাল রঙটিকে ব্যবসার জন্য শুভ মনে করা হয়ে থাকে।
 
শাঁখারিবাজারের মেসার্স নিপা স্টোরের মালিক মো. নুরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, হালখাতার দিনে আসা অতিথিদের জন্য মিষ্টি ও উপহার সামগ্রীর অর্ডার করতে যাবো। আমাদের দোকানে হালখাতার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। লাল মলাটের খাতাও কেনা হয়ে গেছে।
 
অবশ্য অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, হালখাতা প্রথাটি আগে এমন ছিল না। যখন জমিদারি প্রথা ছিল তখন প্রজাদের খাজনা দেওয়ার হিসাবে ‘পুণ্যাহ’ প্রচলিত ছিল। পহেলা বৈশাখের দিন প্রজারা নিজেদের সাধ্যমত খাজনা জমিদার বাড়িতে গিয়ে পরিশোধ করতেন। জমিদারও এ দিনে প্রজাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। কিন্তু এখন জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ায় ‘পুণ্যাহ’ বিলুপ্ত হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নববর্ষে হালখাতার আয়োজন করে আজও।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৭
এমএ/আরবি/এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।