রোববার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর ফকিরাপুল ও বাংলাবাজার ঘুরে এ দৃশ্যই দেখা যায়।
পহেলা বৈশাখের নিরন্তর ব্যস্ততায় ছাপাখানায় কখন রাত নামে, আর কখন দিন আসে তা বোঝা যায় না।
রাজধানীর ৩৮/২ বাংলাবাজারের আমেনা অফসেট প্রেসে কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত অবধি চলছে নববর্ষের কাজ। ১৩ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন এখানে। আগে আরো বেশী শ্রমিক ছিলো। ঠিকমতো টাকা পায়সা না পাওয়ায় কাজ ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই। এখন এই কয়েকজন মিলেই চালিয়ে নিচ্ছেন বৈশাখের কাজ।
ছাপাখানার শ্রমিক খোকন বাংলানিউজকে বলেন, বলতে গেলে ৮০ শতাংশ ছাপাখানায় ঠিকমতো বেতন হয় না। সারা মাস কাজ করে যদি বেতন না পাওয়া যায়, তাহলে কিভাবে শ্রমিক পাওয়া যাবে, তাই যখন কাজের সময় তখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
রাহেলা পাবলিকেশনের আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখ হলো আমাদের ভরা কাজের সময়। ১২ ঘণ্টা ডিউটির পাশাপাশি ৪-৬ ঘণ্টা ওভারটাইমও করি, তবুও হয়তো বেশ কিছু কাজ শেষ করতে পারবো না। আসলে এই ছাপাখানার ভেতরের খবর তেমন কেউ জানে না, ছাপাখানার শ্রমিক পাওয়া বেশ কষ্ট সাধ্য।
নলেজ প্রেসের প্রোডাক্ট ম্যানেজার মানিক রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে আমাদের সব কাজ শেষের পথে। আমাদের ছাপা শ্রমিক যা আছে তা দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছি। যদি আরো কিছু শ্রমিক থাকতো তাহলে খারাপ হতো না।
ছাপা শ্রমিকরা ঠিকঠাক বেতন পায় না, বিষয়টা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আসলে কম বেশি সব জায়গায় এই সমস্যা আছে, তবে এটা খুব বেশি না।
ছাপাখানাতে কোন কিছু ছাপাতে কেমন খরচ হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানের ক্যালেন্ডার ছাপাতে প্রতিটি ১৬০-১৮০ টাকা, ডায়রির জন্য ১২০-৫০০ টাকা ও টেবিল ক্যালেন্ডারের জন্যে ৫০-১০০ টাকা খরচ হয়। আর নববর্ষের কার্ডের জন্যে গুণতে হয় ১৫-৫০ টাকা। সবচেয়ে চাপ থাকে ক্যালেন্ডারের কাজে। তবে মোবাইল ফোন ও ফেসবুকের কারণে কার্ডের চাহিদা কমেই গেছে বলা চলে।
ওয়ান ওয়েডিং কার্ড হাউজে পসরা সাজিয়ে নববর্ষের কার্ড বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী শিমুল। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আগের মতো বেচা কেনা হয় না। বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ডে বা ক্যালেন্ডার আর কেউ দিতে চায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৭
এসটি/জেডএম