সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা ‘মুফতি’ হান্নান ও আরেক জঙ্গি শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে। ‘মুফতি হান্নানের সঙ্গে দু’দফায় তার স্বজনেরা দেখা করলেও বিপুলের স্বজনেরা এখনও কারাগারে আসেননি।
কারা সূত্র জানায়, ‘মুফতি’ হান্নানের ভাই হুজি’র সদস্য ‘মুফতি’ মহিবুল্লাহকে রাখা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে। সেখান থেকে বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে তাকে আনা হয় কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। জেএমবি’র সদস্য আনিস আগে থেকেই ছিলেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এ। দুই ভাই তাদের বড় ভাই ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ সে সুযোগ করে দেন।
দুপুর পৌনে দুইটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত তিন জঙ্গি সহোদরের সাক্ষাৎ হয়। আধা ঘণ্টা সাক্ষাৎ শেষে ‘মুফতি’ মহিবুল্লাহ ও আনিসকে যার যার কারা সেলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এর আগে সকালে প্রায় ৪০ মিনিট সাক্ষাৎ করেন ‘মুফতি’ হান্নানের পরিবারের অন্য চার সদস্য । ভোর ৬টার দিকে কারাগারে পৌঁছানোর পর তার স্ত্রী জাকিয়া পারভীন, দুই মেয়ে নিশাত ও নাজনীন এবং বড় ভাই আলী উজ্জামান সকাল ৭টা ১০ মিনিটে তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পান। তখন থেকে তারা প্রায় ৭টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত হান্নানের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বের হয়ে আসেন।
সাক্ষাৎ শেষে ‘মুফতি’ হান্নানের স্ত্রী জাকিয়া পারভীন মূল কারা ফটকে সাংবাদিকদের বলেন, তার স্বামী কারাগারের ভেতরে ভালো আছেন। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
জাকিয়া পারভীনের দাবি, ‘মুফতি’ হান্নান তাকে বলেছেন, যে মামলায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে, সেটি ‘মিথ্যা’ মামলা, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি তার পরিবারের সবাইকে ধৈর্য্য ধরতেও বলেছেন।
‘মুফতি’ হান্নানের ভাই আলী উজ্জামানও বলেন, তার ভাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
কাশিমপুর কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে তার স্বজনদের মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বলা হয়।
আলী উজ্জামান জানান, কারা কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়ে রাত ৯টার দিকে তারা তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার হিরণ এলাকা থেকে রওনা হন। ভোরে কারাগারে এসে পৌঁছান।
মঙ্গলবার কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেছিলেন, ‘ফাঁসি কার্যকরের আগের সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া যেহেতু শেষ হয়ে গেছে, সেহেতু দুই আসামির পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়েছি। যদি তারা চান, তবে কারাগারে এসে আসামিদের সঙ্গে দেখা করে যেতে পারেন’।
ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি থাকলেও বিধান অনুসারে এটি আসামিদের সঙ্গে স্বজনদের ‘শেষ সাক্ষাৎ’ কি-না, তা বলতে রাজি হননি এই কারা কর্মকর্তা।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা দেলোয়ার হোসেন রিপনের সঙ্গে দু’দফায় শেষ দেখা করে গেছেন তার বাবা-মা ও স্বজনেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
আরএস/এএসআর
** ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করলেন দুই জঙ্গি সহোদরও
** কারাগারে ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করলেন স্বজনরা
** ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে স্বজনরা
** ‘মুফতি’ হান্নান-বিপুলের স্বজনদের ডাকা হয়েছে কারাগারে
** ঢাকায় আসছেন মুফতি হান্নানের পরিবার
** জঙ্গি রিপনের সঙ্গে বাবা-মায়ের শেষ সাক্ষাৎ
** জঙ্গি রিপনের প্রাণভিক্ষা নাকচের চিঠিও কারাগারে
** কারাগারে ‘মুফতি’ হান্নানের সঙ্গে দেখা করলেন স্বজনরা