এ দিনটিতে পুরনোর জীর্ণতা, গ্লানি, ভেদাভেদ ভুলে নতুনকে আহ্বান জানায় বাঙালি। বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়িত রূপ ফুটে ওঠে এ উৎসবের মাধ্যমে।
বাঙালির প্রাণের এ উৎসব উদযাপনে মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাই উৎসব উদযাপনে ঢাবিতে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রতিটি ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সিটিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপন (১৪২৪) উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বর্ষবরণে ১৪ এপ্রিল (শুক্রবার) সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
“মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা”-মর্মবাণী ধারণ করে ঐক্য ও অসাম্প্রদায়িকতার ডাক দিয়ে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে উৎসবে। আমরা আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছি।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের উদ্যোগে কলাভবন বটতলায় ১৪ এপ্রিল সকাল ৮টায় শুরু হবে সংগীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের চিপ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি, উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়েছে।
এদিকে বাংলা নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাজানো ও বিক্রি, কোন ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয় প্রস্তুতি কমিটির সভায়। সভায় ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকায় স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরতরা নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
এসকেবি/জেডএস