তবে বাঁশের এই সাঁকোগুলো নড়বড়ে হওয়ায় অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে স্থানীয়রা।
এতে বেশি সমস্যায় পড়ছে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীসহ বৃদ্ধরা।
বাঁশের এসব সাঁকো পারাপারে এলাকা ভেদে জনপ্রতি দুই থেকে পাঁচ টাকা, বাইসাইকেল পাঁচ টাকা, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা প্রতি নেওয়া হচ্ছে ১০টাকা করে।
প্রতিবছর বন্যার সময় চরাঞ্চল খ্যাত রৌমারী উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যায় রাস্তা-ঘাট, সৃষ্টি হয় ছোট-বড় খানা-খন্দকের। সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যৎসামান্য সংস্কার করা হলেও অধিকাংশ স্থানই থেকে যায় যোগাযোগের অনুপযোগী। আর এইসব স্থানে স্থানীয়ভাবে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারপার করা হয় অর্থের বিনিময়ে। একপর্যায়ে সাঁকোগুলো পুরনো হয়ে নড়বড়ে হয়ে গেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় মানুষজনকে।
রৌমারীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, বিগত বন্যায় উপজেলার ১০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক, অর্ধশত ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রৌমারী ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কুটির চরের আশরাফুল ইসলাম এবং রৌমারী মহিলা ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী বামনের চরের শামীমা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, তিনটি বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কিছু পথ রিকশাভ্যানে চেপে ও অধিকাংশ পথ পায়ে হেঁটে কলেজে আসতে হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভঙ্গুর হওয়ার কারণে সময়মত কলেজে পৌঁছা যায় না। তাই প্রতিদিন কলেজেও আসা হয় না।
মণ্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বামনের চরের হাসান আলী ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিনা বানু বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন দু'টি বাঁশের সাঁকো পেড়িয়ে পায়ে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়। সাঁকো নড়বড়ে হওয়ায় খুব ভয় করে।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হক বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ কালভার্ট মেরামতসহ ভাঙা স্থানে পাকা সেতু তৈরির বরাদ্দ চেয়ে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে যথাসময়ে। তবে যে বরাদ্দ আসে তা দিয়ে অধিকাংশ স্থানেই কাজ করা সম্ভব হয় না।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. রুহুল আমিন জানান, উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা চরাঞ্চল হওয়ায় অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ভঙ্গুর থাকায় এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে না। গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাটের সংস্কার হতে না হতেই আবার আসতে চলেছে বর্ষা মৌসুম। গ্রামীণ সড়কগুলো চলাচলের অনুপোযোগী হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবার সুফল নিতে পারে না সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
এএটি/আরআই