রাজশাহী সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খাঁন শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ দু’টি মামলা তদন্ত করবে সিআইডি।
তিনি আরও জানান, সকালে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা দু’টি মামলারই কাগজপত্র আগের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন। মামলা দু’টি হলেও ঘটনা এক। তাই সিআইডি’র একজন কর্মকর্তাই দুই মামলার তদন্ত করবেন। পরে তদন্তে যা পাওয়া যাবে, এর উপর ভিত্তি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেবেন।
গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাওদা আতিফের মরদেহ উদ্ধার করে শাহ মখদুম থানা পুলিশ। রাওদা ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়, রাওদা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় ওই দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। রাওদার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে গিয়ে ঘটনা তদন্ত করেন। দেশে ফিরে গিয়ে তারা জানান, রাওদাকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাননি।
এদিকে, রাওদার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাওদা আত্মহত্যা করেছেন। তবে গত ১০ এপ্রিল তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, রাওদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
মামলায় রাউধার বান্ধবী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মীরে। তবে সিরাতের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাকে শুক্রবার পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে গ্রেফতার করা হবে কী না সে ব্যাপারেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি না পুলিশ।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলম জানান, রাওদার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন শাহ মখদুম থানার পরিদর্শক আনোয়ার আলী তুহীন। আর অপমৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করছিলেন মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম। বর্তমানে তা সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়েছে
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে অন্য কোথাও কোনো আঘাত বা নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
গত ২৯ মার্চ ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রাওদার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এই মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাওদা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি নারী হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে উঠেছিলেন রাওদা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৭
এসএস/এসএনএস