ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

লাঠিখেলায় মুগ্ধ দর্শকস্রোতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৭
লাঠিখেলায় মুগ্ধ দর্শকস্রোতা লাঠিখেলায় মুগ্ধ দর্শকস্রোতা-ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: একদলের পরনে কমলা রঙের জার্সি। আরেকদলের পরনে হলুদ প্যান্ট ও গায়ে সবুজ ফিতার বেল্ট জড়ানো। রঙ মাখানো বাঁশের লাঠি প্রত্যেকের হাতে। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকজন ঢোলক। রেফরি ছিলেন বাঁশি হাতে দাঁড়িয়ে।

বাঁশির ফুঁক পড়তে লাফিয়ে ওঠেন ঢোলওয়ালারা। পেটাতে থাকেন ঢোল।

লাঠি হাতে নিয়ে মহড়া শুরু করেন খেলোয়াড়রা। বাঁশির সুরে বাদ্যের তালে তালে চলতে থাকে গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া শহীদ টিটু মিলনায়তনে বগুড়া থিয়েটার আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় এ খেলার আয়োজন করা হয়।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢোলের শব্দ বাড়তে থাকে। লাঠিওয়ালাদের মধ্যে চরম পেটাপেটি শুরু হয়। উভয়পক্ষের খেলোয়াড় খেলার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি ঘোরাতে থাকে। আর সুযোগ খোঁজেন আঘাত হানার।

এভাবে চোখের পলকে একে অপরের ওপর আঘাত পাল্টা আঘাত হানতে থাকেন। উভয়পক্ষের খেলোয়াড় অত্যন্ত কৌশলে সেই আঘাত ঠেকিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে মাঝে মধ্যে ফসকে লাঠির আঘাত পড়ছিল শরীরের বিভিন্ন স্থানে। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যান দু’পক্ষের খেলোয়াড়।

লাঠির আঘাত আর পাল্টা আঘাত দেখে উপস্থিত দর্শকস্রোতা আৎকে ওঠেন। কিন্তু সেই আঘাত ঠেকিয়ে দেওয়ার কৌশল ভীষণভাবে মুগ্ধ করে উপস্থিত দর্শকস্রোতাদের। পাশাপাশি খেলার পুরো সময় আনন্দ উল্লাস করেন তারা। গ্রাম বাঙলার বিলুপ্তপ্রায় ঐহিত্যবাহী লাঠিখেলা দেখে মেলায় আসা দর্শকস্রোতারা বেশ কিছু সময় মাতিয়ে থাকেন। লাঠিখেলায় মুগ্ধ দর্শকস্রোতা-ছবি: আরিফ জাহানআয়োজকরা জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই বৈশাখী মেলায় এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৮০ সাল থেকে শেকড়ের সন্ধানে বগুড়া থিয়েটারের যে সৃজনী যাত্রা শুরু হয়েছিল ঠিক তার এক বছর পরেই উত্তর চেলোপাড়া রেলব্রিজ মাঠে গুটি কয়েক মানুষের প্রচেষ্টায় প্রথম বৈশাখী মেলার গোড়াপত্তন হয়েছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ তা মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। বৈশাখী মেলা আয়োজনের এবার ৩৬ বছর।

মেলায় জেলা, জেলা পুলিশ প্রশাসন, বগুড়া পৌরসভা, ঢাকায় বৃহত্তর বগুড়া সমিতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়া,  কলেজ থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে বলে মেলা উদযাপন কমিটি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৭
এমবিএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।