ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বৈশাখী উৎসবে বিলুপ্তপ্রায় খেলা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
বৈশাখী উৎসবে বিলুপ্তপ্রায় খেলা মেলায় নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে মোরগ লড়াইকে। ছবি: আরিফ জাহান।

বগুড়া: যুগ যুগ ধরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে আসছিল গ্রাম বাংলার নানা খেলাধুলা। কিন্তু মোরগ লড়াই, লাঠিখেলা, গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি, কানামাছি, কুঁত কুঁত, বৌছি, পাতা আনা, দড়ির লাফ, ওপেন্টি বায়োস্কোপ, ইচিং বিচিংসহ এসব খেলা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

কালের আবর্তে একে একে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যগুলো।

আজকের প্রবীণেরা শৈশবে এসব খেলাধুলায় সময় কাটিয়েছেন।

তারাও এখন এসব খেলার নাম ভুলতে বসেছেন। আর নতুন প্রজন্মের কাছে তো খেলাগুলো সম্পূর্ণ অপরিচিত।

বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তন প্রাঙ্গনে বগুড়া থিয়েটারের বৈশাখী মেলায় বিলুপ্তপ্রায় এ খেলাগুলোকে তুলে ধরা হচ্ছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) থেকে চলছে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।

নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামীণ খেলাধুলাকে নতুন করে পরিচিত করাতে লাঠিখেলা, মোরগ লড়াই, পাতা আনা, সাপ-বেজির খেলা ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে।

বগুড়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহনকারী এসব খেলাধুলা হারিয়ে ফেলতে বসেছি আমরা। মূলত এমন ভাবনা থেকেই গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে’।

তিনি আরো বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের সামনে বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে, যেন এসব খেলা সম্পর্কে জানতে পারে তারা। নিজেদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি উদ্ধার ও লালনে যেন মনোযোগী হয়ে ওঠে’।

মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে লাঠিখেলাও।  ছবি: আরিফ জাহান‘এভাবে হয়তো একদিন গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো আবারো স্বমহিমায় ফিরে আসবে’।

আনছার আলী, আজিজুল হক, সালাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এক সময় প্রত্যেকটি খেলা গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এসব খেলা দেখতে মানুষের ঢল নামতো। গ্রামজুড়ে চলতো আনন্দ-উল্লাস। কিন্তু আগের সে অবস্থা নেই। এসব খেলা এখন সেকেলে হয়ে গেছে। সেখানে স্থান করে নিয়েছে ক্রিকেট, কেরাম, টিভি, মোবাইল ও কম্পিউটার গেমস ইত্যাদি’।

প্রবীণ এ ব্যক্তিরা মনে করেন, ‘গ্রামীণ সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এখনই সরকারের ভালো কোনো উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগও বড় প্রয়োজন। তাতে নতুন প্রজন্ম এসব খেলাধুলা সম্পর্কে জানতে পারবে। পাশাপাশি বাঙালি জাতি ফিরে পাবে তার নিজস্ব সংস্কৃতি’।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এমবিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।