ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাম্পার কাটিংয়ে মন, চোখ নেই সিটিংয়ে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
বাম্পার কাটিংয়ে মন, চোখ নেই সিটিংয়ে সাত রাস্তার মোড়ে বাম্বার কাটছেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা। ছবি: জিএম মুজিবুর

সাতরাস্তা (ঢাকা) : রোববার। সপ্তাহের প্রথম কার্য দিবস। অফিস আওয়ার শুরু হলো বলে। এ সময়টায় কর্মমুখী মানুষের ভিড় জমে সাত রাস্তা মোড়কে কেন্দ্র করে। কিন্তু আজকের চিত্র ভিন্ন। সাতরাস্তা মোড়ে চলছে অভিযান। আসবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রয়েছেন বেশ কয়েকজন উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাও।

বিআরটিএ কর্মকর্তারা এদিক সেদিক ছুটোছুটি করছেন। কঠোর নজরদারির পরও যাতে কোনো বাম্পার লাগানো গাড়ি পার না পেয়ে যায়।

উৎসুক জনতা ভিড় করে দেখছে। এরই মধ্যে বিআরটিএ’র চোখে ধরা পড়ে বাম্পার লাগানো ছোট একটা ট্রাক।

মুহূর্তেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুস সালামের তত্ত্বাবধানে বাম্পার কাটার যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির বিআরটিএ কর্মীরা। বাম্পার কাটা শুরু হতে দেরি হলো না। জরিমানাও করা হলো এক হাজার টাকা।

বাম্পার অপসারণ এবং সিটিং সার্ভিস ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের জন্য এ অভিযা হলেও বিআরটিএ’র নজর কেবল বাম্পার কাটার দিকেই। ম্যাজিস্ট্রেটের চোখের সামনেই একের পর এক সিটিং সার্ভিসের বাস চলে গেলেও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়লো না বিআরটিএ কর্মীদের মধ্যে।

তাদের চোখের সামনেই সিটিং সার্ভিস এর বাসগুলো সাত রাস্তা মোড়ে এসে থেমেছে, যাত্রী তুলে ছুটে গেছে গন্তব্যে।

শুধু তাই নয়, হেলাপাররা ‘শেওড়া-এয়ারপোর্ট ২০ টাকা’ বলে একটানা হেঁকে গেলেও সে ডাক পৌছায়নি বিআরটিএ কর্মকর্তাদের কানে।   
 
বাম্পার কাটা দেখছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  ছবি: জিএম মুজিবুর অল্প সময়ের মধ্যে আরো চারটি ট্রাক এর বাম্পার কাটলেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা। কিন্তু এরই মধ্যে অভিযানে বাধ সাধলো বৃষ্টি। ঝুম বৃষ্টিতে ছুটোছুটি শুরু করলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ সদস্য ও বিআরটিএ’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কেউবা অবস্থান নিলেন সাতরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে, কেউবা ভৌঁ দৌড়ে আশপাশের ভবনগুলোতেই সেঁধিয়ে গেলেন।

বৃষ্টি চলল প্রায় ৩০ মিনিট। বৃষ্টির পর ফের সাত রাস্তা মোড়ে এলেন পুলিশ সদস্য ও বিআরটিএ কর্মকর্তারা। এখন অপেক্ষা কেবল সড়ক পরিবহন ও  সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের।

সাড়ে ন’টা নাগাদ সাইরেন বাজিয়ে সাতরাস্তা মোড়ে এলেন সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরিদর্শন করলেন অভিযানের কার্যক্রম। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাটালেন ট্রাকের বাম্পার।

এ সময় মন্ত্রী বললেন, বাম্পার অপসারণ ও অন্যান্য অনিয়ম বন্ধে এ অভিযান শুরু হয়েছে। এটা পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে না আসা পর্যন্ত চলবে। আইনের মাধ্যমেই পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা সমাধান করে শৃঙ্খলা আনা হবে। এখানে কাউকে কোনো ছাড়া দেওয়া হবে না।

‘সিটিং’ সার্ভিস বন্ধের ফলে যাত্রী হয়রানির আশঙ্কা আছে কিনা- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়মের মধ্যে সবাই এলে কোনো সমস্যাই হবে না। যাত্রীদের ভোগান্তি রোধেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। মানুষের ভোগান্তি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করবো। সবাইকে এক সঙ্গে হয়েই সড়ক পরিবহনকে নিয়মের মধ্যে আনতে হবে।

সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা শেষেই ওবায়দুল কাদের সাতরাস্তা মোড় ত্যাগ করেন। এরপর মাত্র মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে পড়ে সাত রাস্তা মোড়। চলে যান বিআরটিএ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।