ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অনুমোদন পেয়ে আসছে ‘সিটিং সার্ভিস’!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
অনুমোদন পেয়ে আসছে ‘সিটিং সার্ভিস’! রাজধানীতে কথিত সিটিং সার্ভিস

ঢাকা: ‘সিটিং সার্ভিস’ নামে আলাদা একটি গণপরিবহন সেবা শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে রাজধানীর পরিবহন সেবায়। এখন যেসব বাস সিটিং সার্ভিস আকারে অতিরিক্ত ভাড়ায় চলছে তারাই নতুন ধারায় এ গণপরিবহন সেবা পদ্ধতির আলোকে চলবে। 

এক্ষেত্রে বিআরটিএ’র ‘রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটি’ (আরটিসি) ‘সিটিং সার্ভিস’ নামে নতুন সার্ভিসের অনুমোদন দেবে।
 
বিআরটিএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 

এর আগে সিটিং সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করে বুধবার (১৯ এপ্রিল) ফের এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় বিআরটিএ। মূলত সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক সভায়। সে সভায় ৯০ ভাগ মালিক উপস্থিত ছিলেন।  

কিন্তু এ মালিকরাই পরে তাদের নেতৃস্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মানেননি। চারদিনের মাথায় সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত অকার্যকর হয়ে পড়ে। এরপরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নির্দেশে বিআরটিএ-তে বৈঠক ডাকা হয়।  
 
সে বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় ‘সিটিং সার্ভিস’ নামে আলাদা একটি পরিবহন যুক্ত করার। আর এ প্রস্তাবটি প্রথম তোলেন ওই সভায় উপস্থিত সাংবাদিক নেতা নাঈমুল ইসলাম খান।  
 
যুক্তি তুলে ধরে বৈঠকে তিনি বলেন, একটি বাস স্ট্যান্ডিং যাত্রী না নিলে তার ভাড়াটাতো একটু বেশিই হবে।

এটা একটা আলাদা সার্ভিস হিসেবে থাকা দরকার, নাগরিক হিসেবে এটা আমি মনে করি-বলেন তিনি।
 
সিটিং সার্ভিস রাখার জন্য তিনি শক্তভাবে সুপারিশ তুলে বলেছিলেন, ‘এর জন্য কিভাবে ভাড়া ঠিক হবে তার একটি আইনি কাঠামোতে আনতে ৭ দিনের মধ্যে বসতে হবে। এতে পরিবহন বিট যেসব সাংবাদিক নিয়মিত কাভার করেন তাদের প্রতিনিধিও রাখতে হবে।

এরপরই বিআরটিএ চেয়ারম্যান ৭ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে বসে বিষয়টি আইনি কাঠামোতে আনার সিদ্ধান্ত জানান। অবশ্য সিদ্ধান্ত জানানোর আগে ওই বৈঠকে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন-এর নেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সিটিং সার্ভিসের কড়া সমালোচনা করেন।  
 
এদিকে, সিটিং সার্ভিসকে আইনি কাঠামোতে আনার সিদ্ধান্তের পর সিটিং সার্ভিস বাস মালিকপক্ষকে বেশ উৎফুল্ল দেখা যায়।  
 
বেশ কয়েকজন বাস মালিক বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘সিটিং সার্ভিসে আমরা ভালো সেবা দিতে চাই। মানুষ আরামে স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে যাবে। সেজন্য  একটু বেশি ভাড়া আমরা নিতাম। এতোদিন এটা হয়তো বিআরটিএ’র আইনে ছিলো না। এখন আইনে আসলে পরিবহন খাতেরই লাভ হবে।
 
বাস মালিকরা জানান, বিআরটিসির বাস ছাড়া আর কোনো বাসে ছাত্রদের হাফ ভাড়ার নিয়ম নেই। সিটিং সার্ভিস আইনি কাঠামোতে আসলে ছাত্রদের এখনকার সিটিংয়ের মতো ফুল ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। কারণ সেবাটা বিশেষ।  
 
ইতিহাস পরিবহন-এর বাস মালিক রিপন মোল্লা বলেন, ‘সিটিং বাসে ছাত্রদের আবার কিসের হাফ ভাড়া? এখানে কেউ দাঁড়িয়ে যায় না। যেসব যাত্রী নেওয়া হয় তাদের বসিয়ে নেওয়া হয়। ফ্যান ঠিক থাকে। ’
 
মিরপুর লিংক পরিবহন বাস মালিক হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ওই বৈঠকের পরে তারা আগের মতো সিটিং বাস চালানো শুরু করেছেন। এখন যেদিনই আইন হবে এবং ভাড়া ঠিক হবে সেদিন সেভাবেই চলবে। ’
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে সিটিং বাস চলে এমন বাস কোম্পানি আছ অর্ধশতাধিক। এগুলো অধিকাংশের মালিক আবার প্রভাবশালী রাজনৈতিক।
 
বিআরটিএ অনুমোদিত রাজধানীতে পরিবহন রুট আছে ২৫১টি। কিন্তু সচল রুট আছে ১৫০টি। আর ঢাকা মহানগরীতে ৩ হাজার ৯৩টি বাস এবং ২ হাজার ৮৮৬টি মিনিবাস চলাচলের অনুমতি রয়েছে। সর্বশেষ বৈঠকে নতুন করে ৪০টি রুটে ১ হাজার ১৭০টি বাস চলাচলের অনুমতি দেয় বিআরটিসি। তবে মিনিবাসের ব্যাপারে আর নতুন সুপারিশ নেই। সিটিং অনুমোদন দিলে অনেক পরিবহন ব্যবসায়ী নতুন রুটের আবেদন করতে পারেন বাড়তে পারে বাসের সংখ্যা-এমনটা জানিয়েছেন বাস মালিকরাই।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।