এ বছর বর্ষা না আসতেই রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
রাজধানীতে মশার উপদ্রব দূর করার প্রধান দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগও নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।
তবে এ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ‘বিষফোঁড়া’ হতে পারে নগরীর বিভিন্ন ময়লা পানির খাল।
ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে মে মাস থেকে দুই সিটি করপোরেশনই নগরীর বিভিন্ন স্থান পরিষ্কার রাখা ও ডেঙ্গু জ্বর বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে নিজস্ব ওয়েবসাইটে সচেতনতামূলক প্রচারণা, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও পোস্টারিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার মসজিদের ইমাম ও জনপ্রতিনিধিদেরও এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে।
ডিএনসিসি’র স্বাস্থ্য বিভাগ আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে কিছু সুপারিশমালাও তুলে ধরেছে। জলাবদ্ধ ড্রেন পরিষ্কার, টং ও বস্তিঘর উচ্ছেদ, অঞ্চল ও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্টোর রুমসহ ৮টি সুপারিশ রয়েছে তাদের।
যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার ডেঙ্গু প্রকোপ রোধে বদ্ধপরিকর বলে বাংলানিউজকে জানান ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এস এম এম সালেহ ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, মে-সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। এ সময় প্রচুর বৃষ্টিপাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে। আর ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা ময়লা পানিতে নয়, স্বচ্ছ পানিতেই ডিম পাড়ে। ডাবের খোসা, ফুলের টব বা যানবাহনের পরিত্যক্ত টায়ার, রাস্তার ভাঙা স্থানে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এ মশা ডিম পাড়ে। আর এ মশা একবার ডিম ছাড়লে সে ডিম ছয় মাসেও নষ্ট হয় না। ভৌগলিক কারণেও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ডেঙ্গু প্রকোপ এলাকা।
তিনি আরো বলেন, ‘উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। তবে প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। খালের ধারের বস্তি ও টংঘরগুলো সরানো না গেলে মশার উপদ্রব কমানো সম্ভব নয়। একটি খাল উদ্ধার করে পরিষ্কার করার কয়েকদিন পরই দেখা যায়, আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে’।
সিটি করপোরেশনের জনবল কম বলেও জানান এই স্থাস্থ্য কর্মকর্তা।
সালেহ ভূঁইয়া বলেন, ‘যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি সেসব এলাকায় বেশি পরিমাণে লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানো হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কর্মসূচিও পালন করা হবে’।
তবে নগরীর রাস্তা-ঘাট ও স্যুয়ারেজ লাইন সংস্কারের কারণেও সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। বর্ষার আগে সিটি করপোরেশনের এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষ হবে কি-না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্ষার আগে সিটি করপোরেশনের কাজ শেষ করা কষ্টসাধ্য। কারণ, একেকটি প্রকল্প একেক মেয়াদে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অধিকাংশ কাজ জুনের আগে শেষ হবে’।
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে বস্তি, টংঘর ও খালগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। আমরা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছি। এ কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এমসি/আরআর/এএসআর