খুলনা অঞ্চলের মাধ্যমিক স্তরের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার আঠারো লাখ শিক্ষার্থীকে ‘এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি’ কর্মসূচির সফলতার পর এ নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালক টিএম জাকির হোসেন ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে কর্মসূচি শুরু করেছিলেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এসএম ওয়াহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, খুলনার উপপরিচালকের উদ্যোগটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন এটি স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় পালিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালক জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ১৫/২০ বছর পর আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা আর আমাদের মাঝে থাকবেন না। তাদের মুখে গল্প শোনাতে একটি ইনোভেশন হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছিলাম।
‘বাচ্চারা বই পড়ার থেকে গল্প শুনতে বেশি পছন্দ করে। আর বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্প পড়ার থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে বেশি উদ্দীপ্ত হবে। এখনও প্রত্যেক অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছেন, তারা এসে গল্প শোনালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানবে বাচ্চারা। ’
খুলনা অঞ্চলে আঠারো লাখ শিক্ষার্থী গল্প শুনেছে জানিয়ে ওই অঞ্চলের উপপরিচালক বলেন, তাদের মাঝে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। তাদের দেশাত্মবোধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলাম, তারা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ এবং গর্বিত।
কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে একদিন স্কুলে এসে বলবেন কেন, কি জন্য, কার ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কারা বিরোধীতা করেছিল, কোন কোন দেশ সহযোগিতা করেছিল। যারা বিরোধীতা করেছিল তারা আজও বিরোধীতা করছে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল, তার স্বপ্ন কী ছিল- এসব বিষয় তরুণ প্রজন্ম জানতে পারছে।
ছোট পতাকা হাতে নিয়ে গল্প শোনাবেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের শেষ বক্তব্য হবে- আমরা এই পতাকা নিয়ে যুদ্ধে নেমেছিলাম বঙ্গবন্ধুর ডাকে, কোনো অস্ত্র ছিল না। তোমাদের হাতে সেই পতাকা দিয়ে গেলাম। এই পতাকার মর্যাদা, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব তোমরা অক্ষুন্ন রাখবে।
‘দেশের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনলে কোনো তরুণ জঙ্গিবাদে জড়াবে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত হবে তাদের চেতনা, সে কোনোদিন অন্যায় করতে পারবে না। দেশের সম্পদ নিজের বলে মনে করবে। ’
সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) সাখায়েত হোসেন বিশ্বাস স্বাক্ষরিত আদেশে জানানো হয়, খুলনা বিভাগে গৃহীত ‘এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি’ কার্যক্রম দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের (স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হলো।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার সব অঞ্চলের উপপরিচালক, অধ্যক্ষ, জেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সাখায়েত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খুলনার উপপরিচালক কর্মসূচি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদন বিবেচনা করে আমরা সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনার অনুমতি দিয়েছি।
এখন সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান সাখায়েত হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ