ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৭
অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয় অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয়-ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: প্রজাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, খাজনা আদায় এবং জমিদারীর স্বার্থে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ির খুব কাছেই নির্মাণ করা হয়েছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারীর ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতীক কাচারীবাড়িতে এখন ঘুটে (গোবর) শুকানো হচ্ছে। অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কবির স্মৃতি বিজড়িত কাচারীবাড়িটি।

এরই মধ্যে চুরি হয়ে গেছে কাচারীবাড়ির জানালা দরজাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

খাজনা আদায়ের পাশাপাশি তিনি কাচারীবাড়িতে বসে অনেক কবিতা ও ছোট গল্প লিখেছেন। অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয় তবে শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ী বর্তমানে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর দেখাশোনা করলেও ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই কাচারীবাড়ীটি দেখাশোনা করে না।

গোবরের দুর্গন্ধের কারণে দর্শনার্থীরাও সেদিকে যেতে চান না।

জানা যায়, কিছুদিন আগেও এখানে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজ চলতো। তবে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের পর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ কারণে কাচারীবাড়িটি এখন পরিত্যক্ত।
অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয় সরেজমিন দেখা যায়, অপূর্ব কারুকাজ সমৃদ্ধ দোতলা কাচারীবাড়িটি আগাছা আর বন্য লতা-গুল্মে ছেয়ে গেছে। পাইক পেয়াদা আর বরকনদাজদের হাঁক ডাকে একদিন মুখরিত থাকতো যে বাড়ি আজ সেখানে সুনসান নিরবতা।

স্থানীয় ঘুঁটে ব্যবসায়ীরা এই বাড়ির দেয়াল ও দোতলার মেঝেকে ঘুঁটে শুকানোর (কাঁচা গোবর) আদর্শ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কাচারীবাড়ির ৫ একর জমির বেশ কিছুটা ইতোমধ্যে দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা।

এছাড়া প্রজাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে তৎকালীন সময়ে শিলাইদহে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যেখানে সম্পূর্ণ বিনামূলে জনগণের চিকিৎসা দেয়া হত। শিলাইদহ ছাড়াও অনান্য বিভিন্ন স্থানের লোকজনও চিকিৎসা সেবা নিতে আসতেন এ প্রতিষ্ঠানে।

অযত্ন অবহেলায় দাতব্য চিকিৎসালয়টিও নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারিভাবে সংরক্ষণের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়নি এই প্রতিষ্ঠানটিরও। দেখাশোনা না করায় দেয়ালের ইটও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
অরক্ষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়ি ও চিকিৎসালয় বর্তমানে অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে এই দু’টি স্থাপনা। তবে শিলাইদহের স্থানীয়রা তা সংরক্ষণের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

কুঠিবাড়ীর কাস্টডিয়ান মখলেচুর রহমান জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি সংরক্ষণ করা হলেও এখনো অরক্ষিত কাচারীবাড়িটি। এটিও সংরক্ষণের প্রয়োজন।
 
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক জহির রায়হান জানান, বিশ্ব কবির কাচারীবাড়িটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করলে এটিও দর্শনীয় স্পটে পরিণত হবে, বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।

তিনি আরো বলেন, বাড়িটি সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।