এছাড়া উচ্ছেদের ঘটনায় অস্থায়ী নিষেধজ্ঞা জারিসহ বাদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১০ মে) দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবার রহমান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, বাদী, প্রত্যক্ষদর্শী, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, আরডিসি মোবারক আলী, নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজা হাসান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা খানম, নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল, মাধনগর ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন জানায়, গত ২ মে আদালতের আদেশে পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ভেকু মেশিন লাগিয়ে আদিবাসী ১৫ পরিবারের বাড়ি-ঘর উচ্ছেদ করা হয়। এসময় পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয় বেশ ক’জন আদিবাসী নারী-পুরুষ। পরে এ ঘটনা তদন্তে শুক্রবার (০৫ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আদিবাসীদের উচ্ছেদের বিষয়ে তারা তদন্তে নেমেছেন। কি কারণে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং কোনো ধরনের অনিয়ম বা তাদের ওপর নির্যাতনের কোনো সত্যতা আছে কিনা এসব নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব হচ্ছে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ এর কারণ জানতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, এলাকাবাসী, গণমাধ্যম কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন।
এদিকে ১৫ আদিবাসী পরিবারকে উচ্ছেদের রায়টি বাধ্যকর নয় মর্মে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মঙ্গলবার (০৯ মে) দুপুরে নাটোরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঘোষণামূলক ডিগ্রি বাবদ পিটিশন দায়ের করেছে জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় অস্থায়ী নিষেধজ্ঞা জারিসহ বাদীকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
নাটোর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, আদালত পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও বাদীপক্ষ কেউ ওই জায়গা ব্যবহার করতে পারবেন না।
আর ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পার্শ্বে ৩৯ শতাংশ খাস জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই ঘটনার স্থায়ী নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই তাদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে উচ্ছেদ হওয়া ১৫ আদিবাসী পরিবার এখনও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসের নয় দিনেও তারা নতুন ঠিকানা খুঁজে পায়নি। অর্ধাহারে অনাহারে ও অজানা আতংকেই কাটছে তাদের জীবন। তবে জেলা প্রশাসন থেকে অন্যত্র ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাসের পরও তারা ওই ভিটাতেই খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৭
এসএইচ/