বাপাউবো সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার নাফ নদী বরাবর ৬৭/এ, ৬৭/বি ও ৬৮ নম্বরের তিনটি পোল্ডারের আওতায় ৪৭ দশমিক ৬০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ৪৬টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো রয়েছে। এগুলো প্রকল্প এলাকায় বন্যা ও উচ্চ জোয়ারের হাত থেকে শস্য ও জানমাল রক্ষা ছাড়াও নাফ নদীর নোনা পানির প্রবেশ রোধে ব্যবহৃত হয়।
বাঁধ নির্মাণের সময়ই গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, মায়ানমার সীমান্তে টেকসইভাবে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়নি। ফলে ১৯৯১, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০১০ সালে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করতে প্রতিবারই প্রচুর অর্থ ব্যয়ে পোল্ডারগুলোর সংস্কার করা হয়।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও ব্যবহার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বর্তমানে বাঁধের উপরিভাগে টহল ও যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে মোটরযানে করে বিজিবি সদস্যদের সীমান্ত টহল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে পোল্ডারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত ও সংলগ্ন সীমান্ত সড়কের বিটুমিনাস কার্পেটিং উঠে গেছে। ফলে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত, ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ ছাড়াও প্রকল্প এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় আবারও বাঁধ সংস্কারে ২৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাপাউবো। ফলে প্রতি মিটার বাঁধ সংস্কারে ব্যয় হচ্ছে ১৯ হাজার ৮৩১ টাকা। মোট ব্যয়ের মধ্যে নতুনভাবে বাঁধ নির্মাণে ১২০ কোটি টাকা এবং সীমান্ত সড়কের বিটুমিনাস কার্পেটিং সংস্কারে ১২৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ধার্য করা হয়েছে।
চলতি বছর থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
তবে এবার টেকসইভাবে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেন বার বার এ কাজে ব্যয় করতে না হয় বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (০৯ মে) পরিকল্পনা কমিশনে ‘মায়ানমার সীমান্তে বাঁধ সংস্কার’ প্রকল্পের এ প্রস্তাব পাঠিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান বাপাউবো।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ড. মোহাম্মদ আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের নিরাপত্তা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি সংস্কারে বড় ধরনের উদ্যোগ হাতে নিচ্ছি আমরা’।
তার দাবি, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণেই বাঁধটি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বার বার সংস্কারও করতে হচ্ছে।
অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. হুমায়ূন কবীর বাংলানিউজকে বলেন, মায়ানমার সীমান্তে কয়েকবার বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। এবার আমরা স্থায়ী ও টেকসইভাবে বাঁধ সংস্কার। ফলে আমাদের অনেক অপচয় কমে আসবো। এসব কথা চিন্তা করেই এবার মায়ানমার সীমান্তে বাঁধ নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেবো।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর