এদেশে এতো উচ্চতার দামি বনসাই গাছ ব্যবহারের অতীত নজির নেই। এখন পর্যন্ত তিন প্রজাতির ১০০ টি বনসাই গাছ স্থাপন করা হয়েছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ’-এর অর্থায়ন, ডিজাইন ও পরিকল্পনায় চলছে বনসাই গাছ দিয়ে সড়কশোভা বাড়ানোর কাজ। ক্রেনের সাহায্যে একেকটি বনসাই গাছকে রাস্তার ধারে নির্ধারিত স্থানে বসিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আবেদ মনসুর বলেন, এটাই বাংলাদেশের প্রথম আউটডোর বনসাই স্থাপন। সাধারণত মানুষ ড্রয়িং রুম বা অফিসে বনসাই গাছ সাজিয়ে রাখেন। এতদিন ধরে আমরা মাত্র দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার বনসাই গাছ দেখে আসছি।
কিন্তু আমি চীন, তাইওয়ান এবং হংকংয়ের একাধিক জঙ্গল ঘুরে বড় আকারের এসব বনসাই বাছাই করে নিয়ে আসছি। যেগুলো সড়কে বসাতে ক্রেনের সাহায্য নিতে হয়েছে। ক্রেনে তুলে গাছ লাগানোর এমন দৃশ্যও দেশে প্রথম। বলছিলেন আবেদ মনসুর।

বনসাই গাছ দিয়ে সড়কশোভা বাড়ানোর এই কাজটিকে কেউ কেউ সিটি করপোরেশনের কাজ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবেদ মনসুর। এর ধরনের মিথ্যা পাবলিসিটি পরিহারের আহবান জানান তিনি।
তিনি জানান, বাংলাদেশে দুই থেকে তিন ফুটের ৩০ থেকে ৩৫ বছর পুরনো একেকটি বনসাইয়ের দাম তিন থেকে চার লাখ টাকা। এজন্যই আমাদের খুব ইচ্ছা যে, আমদানি করা বনসাই নিয়ে ঢাকায় একটি এক্সিবিশন আয়োজন করার। যেখানে মানুষ খুব কম দামে এগুলো পাবে।
কারণ বাংলাদেশে যে বনসাই তিন থেকে চার লাখ টাকা দামে বিক্রি হয় আমদানি করলে তার দাম পড়বে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
বিমানবন্দর সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, তিন ধরনের বনসাই গাছ লাগানো হয়েছে। বিমানবন্দরের ঠিক বিপরীতে লাগানো হয়েছে ১২টি বড় আকারের বনসাই। এগুলোর উচ্চতা এবং বয়সও বেশি। একেকটি বনসাইয়ের দাম পড়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার টাকা।

আবার খিলক্ষেত থেকে কাউলা পর্যন্ত সড়কের ধারে লাগানো হয়েছে আরও ৪৮টি। এগুলোর উচ্চতা, শিখর এবং কাঠামো মাঝারি আকৃতির। একেকটির দাম পড়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মতো।
আর মাঝারি থেকে একটু বড় আকারের ৪০টি বনসাই লাগানো হয়েছে কুড়িল সড়কের ধারে। যেগুলোর একেকটির দাম ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এভাবে প্রায় তিন কোটি টাকার বনসাই গাছ এরই মধ্যে লাগানো হয়েছে। এখন এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা চলছে বলে জানিয়েছে ভিনাইল ওয়াল্ড গ্রুপ।
বনসাই ছাড়াও বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ওয়াকওয়ে নিমার্ণ ও শোভাবর্ধন করছে ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ। পুরো সড়কই হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল। ২৪ ঘন্টা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ও সিসিটিভি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হবে সড়কটি। লাগানো হয়েছে কয়েক হাজার এলইডি সড়কবাতি।

নির্মাণকাজ চলছে ডিজিটাল প্যাসেঞ্জার শেড, ফ্রি মোবাইল চার্জিং স্টেশন, ডিজিটাল পুলিশ বক্সের। বসানো হচ্ছে ডিজিটাল ডাস্টবিন, ট্রাফিক সাইন, ভেন্ডিং মেশিন, অ্যাডভারটাইজমেন্ট বোর্ড ও এটিএম বুথ। থাকবে অটো রোডডাস্ট ক্লিনার, এলইডি অরনামেন্টাল গার্ডেন লাইটও।
পুরো সড়কপথে ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাষা ও স্বাধীনতার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনাপ্রবাহ ফুটে উঠবে তিনটি স্মৃতিস্তম্ভে। যার মধ্যে ১২টি ঝরনাও থাকবে। আগামী জুলাই-আগস্টে বিউটিফিকেশন শেষে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠবে পুরো সড়কপথ। এই কাজের তদারকি ও তত্ত্বাবধান করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৭
এসএ/জেএম